ফিল্মের জন্য গানও গেয়েছিলেন সুচিত্রা সেন?
সৌভিক রাজ
সুচিত্রা সেন, তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ ছিল গোটা বাংলা। সিনেপ্রেমীরা আজও মিসেস সেন অভিনীত ছবি দেখলে মেতে ওঠেন। স্বর্ণযুগের হার্টথ্রব সুচিত্রা অভিনয়ের পাশাপাশি গানও করেছিলেন সিনেমার জন্য। মিসেস সেন গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের কথায় গান করেছিলেন। কেন গান গাইতে রাজি হয়েছিলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী? জেনে নেওয়া যাক সেই কাহিনি।
তখন একের পর এক হিট ছবি করছেন উত্তম-সুচিত্রা! হঠাৎই অন্যরকম কিছু করবেন বলে ভাবলেন, মেগাফোন কোম্পানির মালিক কমল ঘোষ।
ঠিক করলেন, বেশ কয়েকজন অভিনেতা অভিনেত্রীকে দিয়ে গান গাওয়াবেন। প্রথমেই বাছলেন সুচিত্রা সেনকে। কিন্তু সংশয় ছিল। কারণ সুচিত্রা তখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। শেষ পর্যন্ত রাজি হলেন মিসেস সেন।
গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের কথায় সুর দিলেন রবীন চট্টোপাধ্যায়। গাইলেন সুচিত্রা সেন! তৈরি হল রেকর্ড। বলা ভাল ইতিহাস তৈরি হল। ১৯৫৯ সালের জুলাই মাসে রেকর্ড বেরোলো ‘আমার নতুন গানের নিমন্ত্রণে’, আর ‘বনে নয় আজ মনে হয়’। বিক্রিও হয়েছিল মারাত্মক।
এবার ‘ফরিয়াদ’ ছবির কথা। ছবির গান তৈরি হচ্ছে, সেই সময় সুচিত্রা সেন ছবির পরিচালক নচিকেতা ঘোষকে বলেছিলেন, তিনি রেকর্ডিংয়ের আগে গানগুলো একবার শুনতে চান। তিনি শুনলেন। ছবির একটা গান ছিল ‘নাচ আছে গান আছে, রূপেরও তুফান আছে …’ আশা ভোঁসলে গানটি গাইবেন। এই গানের মাঝে হাসিও ছিল।
গান শুনে সুচিত্রা সেন নচিকেতাকে বললেন, ‘আপনি এক্ষুনি হাসিটা রেকর্ড করে নিন। ওটা আমার গলায় থাকবে।’ তিনিও তা-ই করলেন। রেকর্ডিংয়ের আগে মুম্বইয়ে আশাজিকে গানটা বুঝিয়ে, বলে দিলেন হাসির জন্য কতটা সময় ফাঁকা রাখতে হবে। আশা ভোঁসলে হাসিটা শুনলেন, তার পর সুরকার নচিকেতা ঘোষকে বললেন, তাঁকে একবার সুযোগ দেওয়া হোক হাসিটা হাসার জন্য। আশাজি এমন হাসি হাসলেন যে, মিসেস সেনও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। নচিকেতা আশাজিকে বলেছিলেন, তুমি মিসেস সেনের মতো হাসতে পারবে না। ব্যস! তাতেই কাজ হয়েছিল।
এই দুই ছবিতেই সুচিত্রা সেনের কণ্ঠ শোনা গিয়েছে।