বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

জন্মদিনে সিঙাড়া ভোগ দেওয়া হয় নেতাজিকে! জানেন কোথায়?

January 23, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রায় পরিবারের কুলদেবতা হলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। পরিবারের উপাস্য দেবতাকে সিঙাড়া নিবেদন করে রায় পরিবার। প্রতিদিনের পুজোয় নেতাজিকে সিঙাড়া ভোগ নিবেদন করাই এ পরিবারের রীতি। কাঁচের দেওয়াল আলমারিতে কাঠের চেয়ার৷ চেয়ারের হেলান দিয়ে রাখা থাকে নেতাজির সাদা কালো ছবি৷ ফুলের মালা পরিয়ে, শাঁখ-ঘণ্টা-ধূপ-ধুনোয় পুজো চলে৷ আলমারির সামনে থাকে গোটা পরিবার৷ বাড়ির কর্তার হাতে থাকে কাচের প্লেট, প্লেটে থাকে ঘরে বানানো সিঙাড়া৷ ১৯৩২ সাল থেকে এই রীতি চলছে৷ কীভাবে শুরু হয়েছিল সিঙাড়া ভোগ নিবেদনের রেওয়াজ?

খিচুড়ি-পায়েস-মিষ্টি-নকুলদানা বা মিছরি নয়, প্লেটে রয়েছে গোটা আষ্টেক ঘরে বানানো সিঙাড়া৷ রায় পরিবারের ‘কুলদেবতা’ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নিত্যপূজায় এই সিঙাড়া ভোগ দেওয়াই ট্র্যাডিশন! সেই ১৯৩২ সাল থেকে এই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে৷ কিন্তু ট্র্যাডিশনের গোড়াটা কোথায়?

সব্যসাচীবাবু জানালেন, আমাদের পরিবার কট্টর কংগ্রেসি৷ ১৯৩২-এ রায় পরিবারের কর্তা রমেশচন্দ্র ও তাঁর ভাই সুরেশচন্দ্র ছিলেন পুরোদস্তুর স্বাধীনতা সংগ্রামী৷ রমেশবাবুর স্ত্রী শিবভাবিনী দেবী ছিলেন বর্ধমান জেলা মহিলা কংগ্রেসের তদানীন্তন সভানেত্রী৷ ফলে রায়বাড়িতেই বসেছিল কংগ্রেসের কর্মীসভা৷ কাষ্ঠশালীতে জনসভা সেরে রায়বাড়িতে পৌঁছে এই কাঠের চেয়ারে বসেই বৈঠক করেছিলেন নেতাজি৷ শিবভাবিনী নিজের হাতে সিঙাড়া তৈরি করে খাইয়েছিলেন দেশনেতাকে৷ শোনা যায়, তারিফ করেছিলেন সুভাষ!

সেই থেকে রমেশবাবু ও তাঁর ভাইয়েরা বলে দেন, ওই চেয়ারে আর কেউ বসবে না৷ এ বার থেকে দেবতার আসনজ্ঞানে অর্চনা হবে ওই চেয়ারের৷ আর সেই পূজার ভোগ যে সিঙাড়া হবে, তাতে আর সন্দেহ কী? মঙ্গলবার তাই রায় পরিবারে ছিল সাজো সাজো রব৷ সকাল থেকে পুজোর প্রস্তুতি, জাঁকজমক তো ছিলই৷ তার উপর ২৩ জানুয়ারি গোটা পাড়াকে সিঙাড়া খাওয়ানোর তোড়জোড়৷ প্রতিবেশিদের সেদিন সিঙারা বিলোনোও যে রায় পরিবারের প্রথা৷ বাড়ির বৌ-ঝিয়েরা হাতে তৈরি করেন ওই সিঙাড়া৷ প্রসাদ হিসেবে বিলি করা হয়৷

সেই সব আগুনঝরা দিনের স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে এখনও আবেগে ভেসে যান বাড়ির সবাই৷ বৃদ্ধ সব্যসাচীবাবু বলেন, ‘একাশি বছর ধরে আগলে রেখেছি এই স্মৃতি৷ ওই চেয়ারের জন্যই আমাদের বাড়ির নাম-যশ৷ ফলে আমাদের বাড়িতে এই চেয়ারই দেবতার আসন৷’ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন দে-ও জানান, ‘রায়বাড়ির কথা অনেক শুনেছি৷ দলের মুখপত্র লোকমতে এ নিয়ে লিখেওছি৷’ কাজেই ২৩ জানুয়ারি নিছক আরেকটা ছুটির দিন নয় পূর্বস্থলীর রায়বাড়িতে৷ এ দিন পুজোর দিন, এ দিন স্মৃতির উচ্ছাসের দিন৷ আর সিঙাড়া খাওয়ার দিন তো বটেই!

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Netaji Subhas Chandra Bose

আরো দেখুন