কীভাবে পালিত হয়েছিল ভারতের প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবস?
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: আজ প্রজাতন্ত্র দিবস। প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি দিনটি প্রজাতন্ত্র/ সাধারণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনে প্রতিটি ভারতবাসীর মনে দেশাত্মবোধক আবেগ জাগ্রত হয়। বিভিন্ন রাজ থেকে দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জাতির অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। বর্তমানের প্রজাতন্ত্র দিবস মহাসমারোহে পালিত হলেও অতীতে প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হত একটু অন্যরকম ভাবেই।
দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর (Jawaharlal Nehru) নেতৃত্বে ১৯২৯ সালে ‘পূর্ণ স্বরাজ'(Purna Swaraj) ঘোষণার পর ১৯৩০ সাল থেকে ২৬ জানুয়ারিকে স্বাধীনতার দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে, পরে দিনটি পাল্টে গিয়ে ভারতবর্ষে যেদিন স্বাধীনতার পতাকা উদিত হয়েছিল, সেই দিনটিকেই স্বাধীনতার দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। ঘটনাচক্রে, দিনটি ছিল ১৫ অগাস্ট। যার ফলে পাল্টে গিয়েছিল ২৬ জানুয়ারির গুরুত্ব।
সংবিধান(Indian Constitution) রচনার পর তা কার্যকর করার জন্য একটি দিনের প্রয়োজন ছিল। তখন ঐতিহাসিক গুরুত্বের বিচারে ২৬ জানুয়ারিকেই বেছে নেওয়া হয় প্রজাতন্ত্র দিবস(Republic Day) হিসেবে। সেই দিনই সকাল ১০ টা বেজে ১৮ মিনিটে পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের সংবিধান কার্যকরী হয়। সেই থেকে জানুয়ারি ভারতে(India) প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হয়।
প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে(Republic Day Parade) কী কী হয়েছিল?
প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লির রাজপথে সেনাবাহিনী, বায়ুসেনা এবং পুলিস বাহিনী মার্চ পাস্ট করেন।
স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন রাজেন্দ্র প্রসাদ(Dr Rajendra Prasad) এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জওহরলাল নেহেরু। চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী(C Rajagopalachari) ভারতের গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত হন। এছাড়া সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল(Sardar Vallabh Bhai Patel) হন ভারতের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
রাজেন্দ্র প্রসাদ হিন্দি ও ইংরেজি দুই ভাষাতে সেই দিন দেশবাসীরউদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।
আমরা সকলেই জানি দিল্লির রাজপথে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই দিল্লির রাজপথে এই মহড়া চলত না। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত এই মহড়া হয়েছিল জাতীয় স্টেডিয়াম, কিংসওয়ে, লালকেল্লা(Red Fort) ও রামলীলা ময়দানে(RamLila Maidan)। দিল্লির রাজপথে ১৯৫৫ সালে প্রথম কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি ড. সুকর্ণ-কে প্রথম প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এছাড়া পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
রাজেন্দ্র প্রসাদ আসার সঙ্গে সঙ্গে স্বশস্ত্রবাহিনী ৩১ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে গান স্যালুটের সাথে সেদিন তাঁকে বরণ করে নেয়। স্বশস্ত্রবাহিনীর ৩,০০০ জন সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।