নতুন প্রজন্মের পাশাপাশি প্রবীণরাও মেতে প্রেম দিবস উদযাপনে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ভ্যালেন্টাইন ডে’তে চকোলেট ‘মাস্ট’। এই প্রজন্মের ভালোবাসার বার্তা যেন মিশে থাকে ডার্ক চকোলেটে। চলতি এই প্রথার মধ্যেও কিন্তু নতুনত্ব খোঁজে ভালোবাসার মানুষ। অতঃপর নজর ফিরেছে মিষ্টির দিকে। বাঙালির ঐতিহ্যের মিষ্টিতেই সেই অভিনবত্ব বা চমক খোঁজার চেষ্টা চলছে এখন। তবে মিষ্টির স্রষ্টারা বলছেন, ভ্যালেন্টাইন ডে এখন শুধু নতুন প্রজন্মের প্রেমের দিন নয়, ভালোবাসার মিষ্টিমুখে হারিয়ে গিয়েছে বার্ধক্যের ভাবনাও। প্রবীণরাও এখন ভালোবাসার দিনটিতে আপ্লুত হয়ে উঠছেন। তাহলে এমন দিনে কি আর মধুরসে বঞ্চিত হওয়া যায়!
তারই পথ ধরে বাজারে হাজির প্রেমের মিষ্টি। কে সি দাশে এবার ‘মাই ভ্যালেন্টাইন’ নামে মিষ্টির পাশাপাশি থাকছে রসের মিষ্টি ‘ভ্যালেন্টিনো’। এবার এই স্পেশাল মিষ্টির চাহিদা অনেকটা বেশি, এমনটাই বলছিলেন এখানকার কর্ণধার ধীমান দাশ। তাঁর কথায়, অল্প বয়সিরা এবারও বেশি মিষ্টি কিনছেন। কিন্তু অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা বয়সকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন। তাঁরাও নাম লিখিয়েছেন উৎসবের আয়োজনে। ধীমানবাবুর মতো একই উপলব্ধি বাঞ্ছারামের কর্ণধার শুভজিৎ ঘোষেরও। তাঁর কথায়, মানুষ বুঝতে পারছেন, ভ্যালেন্টাইন ডে আসলে বেঁচে থাকারই এক অন্যতর সেলিব্রেশন। সেটাই দেখছি গত কয়েক বছর ধরে। এই দিনটিতে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা চকোলেট দিয়ে তৈরি মিষ্টি পছন্দ করবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরাও তেমন মিষ্টি রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ‘টিন এজার’রা আমাদের তৈরি নাড়ুও পছন্দ করছেন একই রকমভাবে। সাদা বা ডার্ক চকোলেটে মোড়া নারকেল নাড়ুর নাম দিয়েছি ‘চকোনাড়ু’। নাড়ুগুলো চিনি বা গুড়ের। ১৬টি নাড়ুর গিফ্ট প্যাক রেখেছি আমরা। তবে নতুন প্রজন্মের পাশাপাশি প্রবীণরাও একই রকমভাবে আনন্দে মাততে চান। অনেকেই মজা করে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বন্ধুকে মিষ্টি খাওয়ান এই দিনটিতে। যাঁরা জীবনকে
উপভোগ করেন, তাঁরা এই দিনটি মিষ্টিমুখেই উদযাপন করেন। আমাদের অভিজ্ঞতা, ১৪ ফেব্রুয়ারি শুধু ভালোবাসার নয়, অপার বন্ধুত্বকে উদযাপনের দিনও।
যাঁদের ঠাকুরঘরের সিংহাসনজুড়ে ছোট্ট গোপাল অধিষ্ঠিত আছেন, তাঁদের বাড়ির ভ্যালেন্টাইন আসলে তিনিই, বলছিলেন ফেলু মোদকের কর্ণধার অমিতাভ দে। তাঁর কথায়, ভ্যালেন্টাইন ডে’তে শুধু গোপাল ঠাকুরের জন্য আমাদের কাছে যে কত মিষ্টির অর্ডার আসে, তার হিসেব নেই। গোপালকে ভালোবাসায় মুড়ে দেওয়ার জন্য ক্রেতারা কিনে নিয়ে যান হরেক বাহারি সন্দেশ। সেই তালিকায় থাকে ‘হার্ট’ চিহ্নের স্ট্রবেরি সন্দেশও। এই মিষ্টির চাহিদা অবশ্য নতুন প্রজন্মের কাছেও বেশি। তবে অমিতাভবাবুর সংযোজন, ভ্যালেন্টাইন স্পেশাল বেকড দইয়ের খোঁজ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। সোমবার তার কাটতি যে ভালোই থাকবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
একটু বয়স্ক মানুষের তরফে প্রেমের দিনটি উদযাপন করার তাগিদ গত বছর থেকেই অনুভব করছেন ব্যাতাই-এর কর্ণধার সৈকত পাল। তিনি বলেন, দেখেছি ৫০ বছর পেরিয়ে যাওয়া বহু ব্যক্তি তাঁর পছন্দের মানুষকে মিষ্টি কিনে দিয়েছেন। তাঁদের অনেকেই অকপটে স্বীকার করেছেন, যতদিন বাঁচবেন, এই দিনটি উদযাপন করবেন। যা যৌবনে হয়নি, তা বার্ধক্যে হবে না, এমন কথা কোথাও নেই। হয়তো দারুণ মাতামাতি হবে না, কিন্তু হৃদয়ের কোমল অনুভূতিগুলো শেয়ার করে সেলিব্রেশন হবে। ৩০ টাকা পিসের ‘লাভ গুজিয়া’ আর ক্ষীরের ‘লাভ রোজ’ দিয়েই সেই মুহূর্তগুলো সাজাতে চায় ব্যাতাই।