স্বাস্থ্য বিভাগে ফিরে যান

Healthy Eating Habits : খাবার বার বার গরম করে খেয়ে বিপদ ডেকে আনাছেন না তো!

February 13, 2024 | 3 min read

নিউজ ডেস্ক , দৃষ্টিভঙ্গি: গরম খাবার খেতে অধিকাংশই খেতে পছন্দ করেন। গরম খাবার খেয়ে যেমন তৃপ্তি আসে তা অন্য কোনও খাবারে আসে না। তবে কি জানেন, খাওয়ার বারবার গরম করে খেলে আসতে পারে ঘোর বিপদ? রান্নার সুবিধার্থে অনেকে একসঙ্গে বেশি পরিমাণ রান্না করে রেখে দেন এবং সেটি গরম করে খান। রোজকার জীবনে সময় বাঁচানোর জন্য রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। পরে সেই খাবার গরম করে খাওয়া হয়। এতে যেমন কমে পুষ্টিগুণ, তেমন বেড়ে যায় রোগের ঝুঁকি।

চিকিৎসকেরা বলছেন, সবসময় টাটকা খাবার খাওয়াই উচিৎ! তাও একান্তই যদি ভাত গরম করে খেতে হয়, সর্বোচ্চ একবার গরম করাই ভালো।

ভাত: সময় বাঁচাতে এবং অফিসের তাড়ার জন্য অনেকেই দুদিনের ভাত একসঙ্গে করে রেখে দেন। তারপর মাইক্রোওয়েভে তা গরম করে খান। ভাত রান্না করার সময় তাতে বেসিলস সিরিয়াস ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হয়। রান্না করা ভাত ফের গরম করলে এই ব্যাক্টেরিয়া সংখ্যায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়ে ডায়ারিয়া পর্যন্ত হতে পারে।

ডিম: ডিম যদি দ্বিতীয়বার গরম করা হয় তাহলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। ডিমের মধ্যে নানা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মে। এসব ব্যাকটেরিয়া পেটের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এছাড়া ডিম দ্বিতীয়বার গরম করলে এরমধ্যে থাকা নাইট্রোজেন অক্সিডাইজড হয় যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। একারণে পুষ্টিবিদদের মতে, ডিম রান্না কিংবা ভাজা যেভাবেই খান না কেন, কোনোটাই দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া ঠিক নয়।

মুরগির মাংস: অনেকেই সময় বাঁচানোর জন্য একবারেই অনেক মুরগির মাংস রান্না করে রাখি কিন্তু মুরগির মাংস বারবার গরম করে খাওয়া উচিত নয়। কারণ মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। রান্নার পরে ফের তা গরম করলে প্রোটিনের কম্পোজিশন বদলে গিয়ে তা থেকে বদহজম হতে পারে।

শাকসব্জি: সবুজ শাকসব্জিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট। শরীর এই নাইট্রেটকে নাইট্রাইটে রূপান্তরিত করে। তবে বারংবার উচ্চ তাপমাত্রায় শাকসব্জিকে গরম করলে তা সব্জির নাইট্রেটকে সক্রিয় করে তোলে। ফলে হজম হওয়ার সময় ওই শাকসব্জি কার্সনোজেনিক বা ক্যান্সার উৎপাদক নানা পদার্থ তৈরি করতে পারে। যেমন, একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে পালংশাককে গরম করে খেলে শরীরে কার্সিনোজেনিক এলিমেন্ট বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আসলে পালংশাকে উপস্থিত নাইট্রেট গরম করার পর নাইট্রাইটস-এ রূপান্তরিত হয়ে যায়। আর এই উপাদানটি শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাইতো পালংশাক রান্না করার সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিত্‍সকেরা।

দুধ: দুধে থাকে খনিজ ক্যালশিয়াম সহ অন্যান্য ভিটামিন যা বারংবার গরম করলে নষ্ট হতে থাকে।

ডাল: দ্রুত জীবাণু সংক্রমণ হয় ডালে। তাই ডাল বেশি পরিমাণে রান্না করে সংরক্ষণ করা উচিত নয়।

তেল ও ভাজাভুজি: কিছু ভাজার পর খানিকটা তেল কড়াইয়ে বেঁচে গেলে অনেক বাড়িতেই সেই বাড়তি তেল বাটিতে তুলে রাখা হয়। সেই তেলে ফের রান্না হয়। ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর এই অভ্যেস। কারণ উচচ তাপে তেল থেকে এক ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি হয় যার নাম অ্যালডিহাইড। এই রাসায়নিক হার্টের অসুখ সহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে সক্ষম। এছাড়া দ্বিতীয়বার তেল গরম করলে তৈরি হতে পারে এইচএনই নামে আরও একধরনের ক্ষতিকর পদার্থ যা জিনের ক্ষতি করে। এছাড়া তৈরি হয় ফ্রি র‌্যাডিকেলস যা কোষগুলিকে ধ্বংস করে। এমনকী ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ায়। একই কাণ্ড ঘটে ভাজা খাবার বারবার গরম করলে।

কী কী করবেন?

ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে প্রথমে খাবারকে ঘরের তাপমাত্রায় আসতে দিন। এবার খাবার রীতিমতো টগবগ করে ফোটান। তাতে খাবারের জীবাণু মারা যাবে। প্রতিবার সমগ্র খাবার ফ্রিজ থেকে বের করে গরম করবেন না। মোট খাবার থেকে তখনকার জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু তুলে নিন। সেটুকুই গরম করুন। কাঁচা মাছ, মাংস খুব ভালো করে ধুয়ে, নুন, হলুদ মাখিয়ে তারপর প্রতিদিনের দরকার অনুসারে আলাদা আলাদা বায়ু নিরোধক বাক্সে রাখুন। রোজ একটা করে বাক্স বের করে রান্না করুন। নাহলে বার বার ঠান্ডা থেকে স্বাভাবিক ও ফের ঠান্ডা হওয়ার অবকাশে মাছ মাংসে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। মাইক্রোওয়েভে খাদ্য ফোটানো যায় না। ফলে খাদ্যে কোনও ব্যাকটেরিয়া বেড়ে উঠলে তা বেঁচে যাওয়ার ও বংশবৃদ্ধির সুযোগ পায়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Chicken, #Milk, #Rice, #Oil, #egg, #daal, #healthy food habits, #oily foods, #vegetables

আরো দেখুন