লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি, RBI-র গভর্নরের পর বিস্ফোরক মোদীর মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: খোদ মোদী এবং তাঁর অর্থমন্ত্রী বারবার বলে এসেছেন, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে। যদিও বাস্তব চিত্রটা ঠিক উল্টো। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অন্যতম হাতিয়ার লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি। বিরোধীদের দাবিকেই কার্যত শিলমোহর দিচ্ছেন মোদীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা। প্রথমে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর, এবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সাফ বলছেন, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছেন, বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। মূল্যবৃদ্ধি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। মোদী সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে, ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এখন অতীত। এরপর মূল্যবৃদ্ধির দায় সম্পূর্ণ রাজ্যের উপর চাপিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকের পর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধি এখনও স্বাভাবিক গণ্ডিতে নামেনি। বুধবার দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্সে অর্থনীতি সংক্রান্ত আলোচনাসভায় ভারত সরকারের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরণ জানান, মূল্যবৃদ্ধির অবসান হয়নি। লড়াই এখনও চালাতে হবে। তিনি আরও বলেন, খাদ্যপণ্যের চাহিদার সঙ্গে জোগান পাল্লা দিতে পারছে না, এটাই মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। চাহিদার তুলনায় জোগান কম হওয়ায় খাদ্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
ভি অনন্ত নাগেশ্বরণের মতে, নীতি নির্ধারকদের সবার আগে উৎপাদন বৃদ্ধির কথা ভাবতে হবে। খাদ্যপণ্যের সরবরাহ যেন সর্বত্র বৃদ্ধি পায়, সেদিকে নজর দিতে হবে। মূল্যবৃদ্ধির ঘেরাটোপ থেকে বেরতে গেলে জোগান সমস্যা মেটাতেই হবে। তিনি আরও বলেন, মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে সামাজিক ও পারিবারিক অস্থিরতা তৈরি হয়। চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করলে ভারতের চলবে না। দুই অর্থনীতির চরিত্র ও অগ্রগতি আলাদা।
খাদ্যের ঘাটতি পূরণ হবে কী করে? প্রশ্ন তোলেন ভি অনন্ত নাগেশ্বরণ। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল অবধি, মূল্যবৃদ্ধির কারণগুলোর মধ্যে ৫৫ শতাংশ কারণই হল চাহিদা ও জোগানের অসাম্য। সব্জি, তেল, দুধ, ডিম, ডাল, চিনি, খাদ্যশস্য ইত্যাদির সরবরাহে সমস্যা থেকে গিয়েছে। নাগেশ্বরণের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, উৎপাদন ও জোগান বৃদ্ধি ছাড়া মূল্যবৃদ্ধি থেকে পরিত্রাণের পথ নেই! কিন্তু আদৌ কি তা নিয়ে ভাবছে মোদী সরকার?