মোদীর সাধের জিএসটি বা পণ্য ও পরিষেবা কর কাঠামো নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জিএসটিতে সমস্যা বাড়ছে? জন্মলগ্ন থেকে এই অভিযোগই তাড়া করে বেড়াচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সাধের জিএসটি বা পণ্য ও পরিষেবা করকে। একের পর এক ছোট কোম্পানি নিঃস্ব হয়ে যাওয়া, রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ, এক হাজার বারেরও বেশি আইন ও বিধির সংশোধন। তারপরও ধুঁকছে সাধারণ মানুষ ও শিল্প মহল।
সম্প্রতি কলকাতায় এসে জিএসটি (GST) বিশেষজ্ঞ তথা সুপ্রিম কোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী জে কে মিত্তাল বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী সরকার যখন জিএসটি ব্যবস্থা চালু করে, তখন আশা করা হয়েছিল কর সংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা কমবে। আইনি জটিলতা কাটবে। আগের ব্যবস্থায় কর ফাঁকি দেওয়ার যে রাস্তাগুলি খোলা ছিল, সেগুলি বন্ধ হবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক তার উল্টো। আশা ছিল, কর ফাঁকির ছিদ্রগুলি বন্ধ হলে কর আদায়ের পরিমাণ যেমন বাড়বে, তেমনই স্বচ্ছ ও সরল হবে গোটা ব্যবস্থা। আমরা একটা থিতু কর ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে পারব। কিন্তু জিএসটি চালুর ছ’বছর পর মনে হচ্ছে, এই কর ব্যবস্থায় মামলার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই।’
এক বছরে হাইকোর্ট-সহ অন্যান্য আদালতে জিএসটি সংক্রান্ত প্রায় এক লক্ষ মামলা ঝুলে আছে। আর তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকার কর। ফলে প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক যে, পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থা চালু হওয়ার এতদিন পরও কেন ট্রাইব্যুনাল তৈরি হল না? সেই প্রশ্নই তুলছে ব্যবসায়ীদের সর্বভারতীয় সংগঠন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স। ব্যবসার স্বার্থে ও মামলা মোকদ্দমা কমাতে চালু হোক ট্রাইব্যুনাল, চাইছে তারা।
জে কে মিত্তাল একগুচ্ছ কারণ সামনে এনে বলেছেন, ‘কর না দেওয়ার বিরুদ্ধে একই সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ছে অডিট টিম, রিটার্ন স্ক্রুটিনি টিম, অ্যান্টি ইভেশন টিম এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব জিএসটি ইন্টেলিজেন্স। তারা নির্দিষ্ট আর্থিক বছরে একই করদাতার উপর একই তথ্য ও নথি নিয়ে কাজ চালাচ্ছে। কোনও আইনি ক্ষেত্রে এমনটা শোনা যায় না। জিএসটি আইন এবং তার বিধি যেভাবে তৈরি হয়েছে, সেগুলি যেমন দুর্বল, তেমনই যে প্রশাসন সেগুলি নিয়ে কাজ করছে, তারাও ততধিক দুর্বল। এক শ্রেণির আধিকারিক তাঁদের অসীম ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। অথচ সরকারের বা প্রশাসনের উপর মহলের তার উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। এতেই বাড়ছে মামলা-মোকদ্দমা।’ পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ‘জিএসটি জমা করার মূল পোর্টাল জিএসটিএন যেভাবে চলছে, জিএসটি আইন সেই পথে চলছে না।’