অটোইমিউন ডিজিজ নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে, এই অসুখটি কী?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রতিটি মানুষের শরীরে প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকে। যার কাজ হল শরীরের ক্ষতি করে এমন কিছু, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি প্রবেশ করতে চাইলে তার সাথে লড়াই করে তাকে বাধা দেওয়া। ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অ্যান্টিবডি নিঃসরণ করে, শরীরের শত্রুকে মোকাবিলা করে। কিন্তু কেউ অটোইমিউন ডিজিজে আক্রান্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভুল করতে থাকে। শত্রু এবং সুস্থ কোষের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে না।
সম্প্রতি ডার্মাটোমায়োসাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ‘দঙ্গল’ খ্যাত অভিনেত্রী সুহানি ভাটনগর (১৯)। ডার্মাটোমায়োসাইটিস এক ধরনের অটোইমিউন ডিজিজ। এতো অল্প বয়সে অভিনেত্রীর মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে অটোইমিউন ডিজিজ নিয়ে চর্চা।
অটোইমিউন ডিজিজ (Autoimmune Diseases) প্রায়শই শনাক্ত করতে সমস্যা হয়, দেরি হয় এবং রোগটি কখনোই পুরোপুরি নিরাময় করা যায় না। তবে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
কিন্তু তারপরও পারিপার্শ্বিক কারণে হঠাৎ খারাপের দিকে চলে যেতে পারে। অটোইমিউন ডিজিজ অনেক সময় বংশগত হয় থাকে। তবে যে কেউ বংশগত কারণ ছাড়াও আক্রান্ত হতে পারেন।
প্রায় ৮০টি অটো-ইমিউন ডিজিজের খোঁজ মিলেছে। সাধারণভাবে অটো-ইমিউন ডিজিজ দুই ধরনের। অর্গ্যান স্পেসিফিক এবং নন-অর্গ্যান স্পেসিফিক বা সিস্টেমিক। অর্গ্যান স্পেসিফিকের মধ্যে হাশিমোটো থাইরয়েড, টাইপ-১ ডায়াবেটিস পড়ে। এছাড়া প্যাংক্রিয়াস, অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতেও অটো-ইমিউন ডিজিজের প্রভাব লক্ষ করা যায়। সিস্টেমিক অটো ইমিউন ডিজিজের মধ্যে পড়ে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সিস্টেমিক লুপাস, ডার্মাটোমায়োসাইটিস ইত্যাদি।
নিয়ম মেনে চললে অটো-ইমিউন ডিজিজ কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ। যাঁদের ব্যথা থাকে, তাঁদের নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টিইনফ্লমেটরি এজেন্ট দেওয়া হয়। রোদ থেকে যাঁদের এই সমস্যা হয়, তাঁদের কড়া রোদে না বেরনোই উচিত। এছাড়া, মহিলাদের জন্মনিরোধক পিল খেতেও বারণ করা হয়। কারণ ওতে ইস্ট্রোজেন থাকে। এছাড়া, আরেক ধরনের চিকিৎসা হয় ইমিউনো সাপ্রেসিভ এজেন্টের মাধ্যমে। যাঁদের ইমিউন রেসপন্স ডিসরেগুলেশন হয়, তাঁদের এই ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়। পাশাপাশি স্ট্রেরয়েডও দেওয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। বেশি ব্যবহারে ইনফেকশন হতে পারে। খুব জরুরি অবস্থায় প্লাজমা থেরাপিও করা হয়ে থাকে।