ত্বক সুন্দর রাখতে যা করবেন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আপনার আশপাশে এমন মানুষ নিশ্চয়ই আছে, যাঁর সুন্দর ত্বক দেখলেই আপনার ভীষণ হিংসা হয়। মনে হয়, আপনার কেন হয় না এমন। আর তারকাদের ক্ষেত্রে তো কথাই নেই। শুধু আপনি কেন! তাঁদের ত্বকে মোহিত হয় না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। এই সুন্দর ত্বকের রহস্য কিন্তু দামি দামি স্কিনকেয়ার পণ্যে নেই। হ্যাঁ, সেগুলোর অবশ্যই ভালো ভূমিকা আছে। তবে তার চেয়েও বড় ভূমিকা আছে অভ্যাসের। জিজ্ঞেস করলে দেখবেন, তাঁরা ত্বকের সুরক্ষায় নিয়মিত কিছু কাজ করেন।
প্রখর তপন তাপে শুধুই যে আমাদের ধরিত্রী রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে উঠছে তা কিন্তু নয়, একই রুক্ষতা পেয়ে বসছে আমাদের ত্বককেও। সেক্ষেত্রে চাই সঠিক দেখভাল। এমন কিছু, যার মাধ্যমে ত্বক উজ্জ্বল আর ঝলমলে হয়ে উঠবে। আমাদের প্রকৃতিতেই এমন উপাদানের সন্ধান রয়েছে।
ব্যবহার করুন প্রাকৃতিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট
গবেষণাতেও দেখা গেছে, কৃত্রিম পণ্যগুলোর তুলনায় প্রাকৃতিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ত্বকের জন্য অধিক নিরাপদ। এগুলো আপনার ত্বকের গভীর থেকে কাজ করে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয় কম। তবে আপনি কোন ধরনের স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন, নির্ভর করে আপনার ত্বকের প্রকৃতির ওপর। সবচেয়ে ভালো হয় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিলে।
ঘুমানোর আগে মেকআপ মুছে ফেলুন
এখন জীবন অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সারা দিন নানা কাজে ছোটাছুটি করতে হয়। ফিরতে ফিরতে প্রায়ই রাত হয়ে যায়। ক্লান্ত দেহে আর কিছুই করতে ইচ্ছা করে না। অনেকে এমনকি মেকআপ না তুলেই শুয়ে পড়ে। ত্বক ভালো রাখতে হলে এই বদঅভ্যাস বদলাতেই হবে। যত রাতই হোক আর যত ক্লান্তই থাকুন, ঘুমানোর আগে মেকআপ মুছে নিন।
ত্বক চর্চা করুন প্রতি রাতে
ত্বক চর্চার জন্য সেরা সময় রাতের বেলা। কারণ দুটি; প্রথমত, এ সময় ত্বকে রক্ত চলাচল বেশি হয়। মানে অক্সিজেনের জোগান সবচেয়ে বেশি থাকে। দ্বিতীয়ত, রাতে আপনার ত্বকে ময়লা, সূর্যের আলো বা অন্য কিছু পড়ে না। তাই প্রতি রাতে নিয়ম করে ত্বকের যত্ন নিন। সে জন্য সবার আগে ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। তারপর আপনার ত্বকের প্রকৃতি অনুযায়ী সেরাম বা প্যাক দিন।
স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন
স্বাস্থ্যকর জীবনের মূল বিষয় তিনটি। ভালো খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা ও পর্যাপ্ত ঘুম। প্রথম দুটি সরাসরি আপনার শরীরের সঙ্গে যুক্ত। কিছু খাবার সরাসরি আপনার ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। যেমন কমলা বা টমেটো। অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয় যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করুন পর্যাপ্ত ঘুম। কারণ, সেই সময়ই আপনার ত্বক তার সারা দিনের ক্ষতি সারিয়ে তোলে।
ফল খান
আখের রসে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড থাকলেও অন্যান্য ফলের রসেও তা কম বেশি পাওয়া যায়। ফলে ত্বকের টোনিং-এর জন্য যদি কমলালেবু, পেঁপে, আপেল, আঙুর ইত্যাদির রস ব্যবহার করা যায় তাহলে প্রাকৃতিক উপায়ে এই অ্যাসিড ত্বকে মিশবে। ফলে যদি আপেল, পেঁপে, কমলালেবু বা আঙুরের রস রোজ দু’বেলা মুখে মেখে পনেরো মিনিট রেখে দেন, তারপর তা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলেন, দেখবেন ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। এই ধরনের পরিচর্যা বিশেষত তাঁদের পক্ষে উপযোগী যাঁদের ত্বকে তৈলাক্তভাব খুবই বেশি। সেক্ষেত্রে ফলের রসের মাধ্যমে ত্বকে যে পরিমাণ গ্লাইকোলিক অ্যাসিড মেশে তাতে ত্বক উজ্জ্বল তো হয় বটেই, পাশাপাশি তার তৈলাক্তভাবও অনেকটাই কমে।
রোদ ঝলসানো ত্বক
মোটামুটি সব ধরনের ত্বকের জন্যই গ্লাইকোলিক অ্যাসিডযুক্ত ক্রিম উপকারী। তবে কিছু ত্বক এমনও হয় যা রোদে পুড়ে যায় বেশি। এমন ত্বকের জন্য তো এই ধরনের উপাদান একেবারে একশোভাগ কার্যকর। হাইপার পিগমেন্টেশনের (ঝলসে যাওয়া) সম্ভাবনা থাকলে অবশ্যই লাগান গ্লাইকোলিক অ্যাসিড যুক্ত ক্রিম বা লোশন। রোদে বেরনোর মিনিট পাঁচেক আগে এই ক্রিম মুখে, গলায়, ঘাড়ে, হাতে লাগিয়ে হালকা মাসাজ করে নেবেন। সেক্ষেত্রে ত্বকে এই ক্রিম ভালোমতো মিশে যাবে। তাতে উপকারের মাত্রা আরও বেশি হবে।