লোকসভা নির্বাচনে BJP-র ‘মিশন বাংলা’, সেই লক্ষ্য পূরণ করতেই কি এত আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছতে শুরু করল রাজ্যে?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: লোকসভা নির্বাচনের দিন এখনও ঘোষণা হয়নি। কিন্তু তার আগেই রাজ্যে পৌঁছতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুক্রবার ১০০ এবং ৭ মার্চ আরও ৫০ কোম্পানি মিলিয়ে মোট ১৫০ কোম্পানি বাহিনী পৌঁছে যাওয়ার কথা রাজ্যে। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার আগে এত সংখ্যায় বাহিনী রাজ্যে চলে আসার উদাহরণ, এর আগে কখনও ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না প্রবীণ আধিকারিকদের অনেকেই।
শুধুই কি রুট মার্চ, এরিয়া ডমিনেশন বা ভোটদের মনে আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে এতো আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত? নাকি নেপথ্যে আছে অন্য কারণ? জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, শুধু রুটিন রুটমার্চ নয়, এই প্রথমবার স্পর্শকাতর এলাকাও চিহ্নিত করবে সিআরপিএফ। বাংলার জন্য কমিশন এই সিদ্ধান্তই নিয়েছে। আর তাই তড়িঘড়ি এত আগে বাহিনী পাঠানো হয়েছে এরাজ্যে।
এর আগে বাংলার ভোটে বিপুল সংখ্যক আধাসেনা মোতায়েনের পরও অভিযোগ পিছু ছাড়েনি। মূলত গেরুয়া শাসক শিবিরই বারবার এই ইস্যুতে বাজার গরম করে রেখেছে। কমিশনকে শুনতে হয়েছে, রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের হাতে বাহিনীর রাশ থাকায় তাদের যথাযথভাবে মোতায়েনই করা হয়নি। সূত্রের খবর, এই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি এড়াতে আধাসেনার রাশ বাহিনীর কর্তাদের হাতেই রাখতে চাইছে কমিশন। তাই তাদেরই স্পর্শকাতর এলাকা চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কমিশন সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে যে বিপুল সংখ্যক (৯২০ কোম্পানি) বাহিনী চাওয়া হয়েছে, তাদের দু’টি ভাগে বিভক্ত করে কাজে লাগানো হবে। প্রথম লপ্তে যে ১৫০ কোম্পানি বাহিনী আসবে, তাদের কাজ হবে স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে কমিশনের কাছে রিপোর্ট পাঠানো। রাজ্যের সব জেলাশাসক ও পুলিস সুপারের কাছে কমিশনের তরফে এই মর্মে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে বলেও খবর। তাতে বলা হয়েছে, এলাকা চেনানোর কাজে বাহিনীকে সাহায্য করতে হবে স্থানীয় পুলিস প্রশাসনকে। জানা গিয়েছে, স্পর্শকাতর এলাকা নিশ্চিত হলে ভোটের দিনগুলিতে নিজেদের মতো করে ‘মোতায়েন পরিকল্পনা’ স্থির করবেন বাহিনীর কর্তারা।
এছাড়াও খবর আছে, ভোট ঘোষণার পরপরই নাকি রাজ্যে আরও প্রায় ৫০ থেকে ১০০ কোম্পানি বাহিনী আসবে। তাদেরও লাগানো হবে এই একই কাজে। কমিশনের এক কর্তার কথায়, প্রাথমিক পরিকল্পনা হল, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো এবং উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে ভোটাররা যাতে বিনা বাধায় ভোটকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন, তা নিশ্চিত করবে বাহিনী একটা অংশ। অন্য অংশকে বুথ পাহারার কাজে লাগানো হবে। তারা নিজেরা স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করলে কাজটা সহজ হবে।