তিস্তার জলের নীল রং উধাও, শঙ্কায় নদী বিশেষজ্ঞরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রাকৃতিক বিপর্যয় কতটা পরিবর্তন ঘটাতে পারে, তা পাহাড় তো বটেই এমনকি পুজোর সময় সমতল উত্তরবঙ্গের একটা অংশের মানুষ ইতিমধ্যেই টের পেয়েছেন। সেই ক্ষতচিহ্ন এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। পাহাড় থেকে সমতল, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তিস্তার (Teesta River) বুকে শুধুই পলি আর পলি। কোথাও কোথাও পলির পাহাড় জমেছে। জলের সেই নীল রং উধাও।
সাধারণত বর্ষার সময় নদীর জল (Teesta Water) ঘোলাটে হয়ে যায়। কিন্তু বর্ষা শেষে এবং শুখা মরশুমে তিস্তা ফিরে পায় তার আসল রূপ। কিন্তু এখন শুখা মরশুমেও তিস্তার জলে লাগেনি তার চিরাচরিত নীল রং। পলি মিশে ঘোলাটে হয়ে রয়েছে।
গত অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ফুলেফেঁপে উঠেছিল তিস্তার জল। পাহাড় থেকে নদীতে চলে আসে প্রচুর পলি। স্বাভাবিক পলির সঙ্গে এই পলির মিল নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক রূপককুমার পালের বক্তব্য, ‘গ্লেসিয়াল লেক বা বরফ হ্রদের নীচে যে পাথর ও কাদা মিশ্রিত আস্তরণ জমাট বেঁধে থাকে, বিপর্যয়ের জেরে তা-ই এসে মিশেছে তিস্তায়। ফলে তার স্বাভাবিক পলির থেকে এখন জলের মধ্যে থাকা পলির ভূতাত্ত্বিক পার্থক্য যথেষ্ট।’
নদী বিশেষজ্ঞ জাতিস্মর ভারতী মনে করেন, ‘দু’পাশের কাদামাটি ও পলি মিশছে জলের সঙ্গে। পাশাপাশি বিভিন্ন বাঁধ থেকে যে জল ছাড়া হচ্ছে, তার সঙ্গেও পলি নেমে আসছে।’ ডুয়ার্সের বিভিন্ন নদী নিয়ে কাজ করা বানারহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকল্যাণ ভট্টাচার্যের মত, ‘শুখা মরশুমেও যখন জল ঘোলাটে, তখন তার কারণ খোঁজা প্রয়োজন।’