রানাঘাটে BJP প্রার্থী জগন্নাথের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন দলীয় বিধায়ক মুকুটমণি?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে জগন্নাথ সরকারকেই ফের প্রার্থী করেছে বিজেপি। জোরকদমে তিনি প্রচারেও নেমে পড়েছেন। তবে জগন্নাথকে প্রার্থী করা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বিজেপির অন্দরে। তাঁর পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারেন দলেরই বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী (Mukutmoni Adhikari)।
সোমবার সকালে শান্তিপুরের আড়াপাড়া গ্রামের বাড়িতে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বৈঠক সারেন রানাঘাটের সাংসদ। পরনে ছিল ধূসর রঙের গরদের পাঞ্জাবি। মুখে প্রশস্ত হাসি। স্থানীয় কালীমন্দিরে পুজো দিয়ে দলীয় প্রার্থী হিসেবে শুরু করেন প্রচার। এরপর রানাঘাটের দলীয় কার্যালয়ে ফের বৈঠক। তবে দলীয় কার্যালয়ে জেলা সভাপতি এবং রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক উপস্থিত থাকলেও দেখা যায়নি রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক বিজেপির মুকুটমণি অধিকারীকে।
সরকারের বিকল্প হিসেবে একাধিক নামের মধ্যে মতুয়া সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ বিধায়ক মুকুটমণির নাম বহু চর্চিত ছিল। কিন্তু, জল্পনা কাটিয়ে জগন্নাথবাবু টিকিট পেতেই মুকুটের এদিনের অনুপস্থিতিতে দলের ফাটল আরও চওড়া হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সাংসদ বনাম বিধায়ক কাজিয়া একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে। ২০২২ সালের দুর্গাপুজোর পর দুই গোষ্ঠী পৃথকভাবে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল। তখন শান্তিপুরের একটি ভবনে বিজেপির আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিনা আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন সাংসদ জগন্নাথ সরকার। ভবন ছেড়ে বেরিয়ে বাইরের মাঠে পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল মুকুটমণি গোষ্ঠী। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় গত বছর কুপার্সের বিজয়া সম্মিলনীতে। একাধিক দলীয় কর্মসূচিতেও জগন্নাথ এবং মুকুটকে একমঞ্চে দেখা যায়নি। বিজেপির নিচুতলার কর্মীরা বলছেন, জেলা নেতৃত্বের তরফে ফাটল মেরামতির চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, সফলতা আসেনি।
যদিও অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয়কে একেবারেই আমল দিতে নারাজ রানাঘাটের সাংসদ। জগন্নাথবাবু (jagannath sarkar) বলেন, কেউ দলের বিরোধিতা করলে আমরা তাঁকে গাইডলাইন দিই। বাড়ির বড়দের শাসন সবাই মানতে পারে না। কেউ কেউ বিদ্রোহী হয়। তাঁকে আমরা বাড়ির অবাধ্য ছেলে বলি। ঘরের মান-অভিমান আমার জয়ের পথে কখনওই বাধা হবে না। এরপরেই আরও একধাপ এগিয়ে রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক হওয়া নিয়ে মুকুটমণি সম্পর্কে তাঁর দাবি, মুকুটমণি বিজেপির সদস্যও ছিল না। বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের নির্দেশে আমি ওর হয়ে প্রচার করে ওকে সামনে এনেছিলাম। যে বিদ্রোহী হয়, সে হয়তো ভালোবেসে দলে আসেনি। পদের লোভে এসেছিল। দুর্ভাগ্য, মানুষের আচরণ বদলে যায়।
পাল্টা মকুটমণি বলেন, আমার বিষয়ে বঙ্গ বিজেপি (BJP) সম্পূর্ণ উদাসীন। এর আগে আমি কখনও দলীয় বৈঠকে ডাকা পাইনি। এদিনও আমাকে ডাকা হয়নি। তিনি আরও বলেন, সাংসদ যদি দাবি করে থাকেন তিনি আমার হয়ে প্রচার করেছেন, তাহলে বলব ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলের হয়ে টিকিট পাওয়ার কথা ছিল আমারই। উল্টে তাঁর হয়ে আমি টাকা খরচ করে প্রচার করেছিলাম। সাংসদ হিসেবে উনি একেবারে ব্যর্থ।