নির্বাচনের প্রাক্কালে BJP ত্যাগ ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রমের, তৃণমূলে যোগের সম্ভাবনা!
![](https://drishtibhongi.in/wp-content/uploads/2024/03/Kunar-Hembram-2-1024x576.jpg)
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাংলার ২২টি আসনের প্রার্থীদের নাম এখনও ঘোষণা করেনি বিজেপি। যা নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। এমনিতেই প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বিদ্রোহে বেসামাল অবস্থা বঙ্গ বিজেপি’র।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি ছাড়ার কথা শুক্রবার জানিয়ে দিলেন ঝাড়গ্রামের গেরুয়া সাংসদ কুনার হেমব্রম। জঙ্গলমহলের অন্য আসনগুলিতে বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন বিদায়ী সাংসদরাই। প্রথমদফায় তাঁদের নামও ঘোষণা করেছে দল। তবে ঝাড়গ্রামে এখনও পদ্ম প্রার্থীর নাম ঘোষণা বাকি। তার আগেই কুনার হেমব্রম দল ছাড়ার কথা জানালেন।
এরপরই রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, কুনার হেমব্রমের যোগদানের বিষয়ে দলের অভ্যন্তরে আলোচনা হয়েছে। সম্ভবত রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা হাতে তুলে নেবেন।
টিকিট পাবেন না সেই আশঙ্কা থেকেই কি এমন সিদ্ধান্ত? জবাব দেননি কুনারবাবু। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের দাবি, অনেকদিন ধরেই তিনি দলের অন্দরে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর কাজের প্রচারটুকু করা হতো না। নানা ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে জেলা নেতৃত্বের মতানৈক্যও ছিল চরমে। কুনারবাবুর দলত্যাগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘বিজেপি দলটাই দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। কেউ আর বিজেপি করবে না। কারণ, ওরা প্রতিশ্রুতি পালন করে না। এই বিজেপি সাংসদও করেননি।
বিজেপির জেলা নেতারা অবশ্য এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সুখময় শতপথী শুধু বলেন, ‘‘কুনারদা ব্যক্তিগত কারণে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সামাজিক কাজে সময় দেবেন বলে ফোনে জানিয়েছিলেন। তবে তিনি দল ছাড়ার কথা জানিয়ে নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছেন কি না আমার জানা নেই।’’ সূত্রের খবর, জেলা বিজেপির এক নেতা এ দিন কন্যাডোবা গ্রামের বাড়িতে কুনারকে বোঝাতে গিয়েছিলেন। তবে কুনার মত বদলাননি।
প্রাক্তন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কুনার বিজেপিতে যোগ দেন ২০১৭ সালে। তখন তিনি জনজাতি মোর্চার জেলা সভাপতি ছিলেন। তারপর ২০১৯-এ সাংসদ হন। তবে এ বার তিনি টিকিট পাবেন কিনা নিশ্চিত নয়। গত ২ মার্চ প্রথম দফায় রাজ্যের যে ২০টি লোকসভায় বিজেপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে ঝাড়গ্রাম নেই। তবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর আসনে বিজেপির বিদায়ী তিন সাংসদই ফের দলের প্রার্থী হয়েছেন। পুরুলিয়ার জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, বিষ্ণুপুরে সৌমিত্র খাঁ ও বাঁকুড়ায় প্রার্থী হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার।
সূত্রের খবর, এরপরই ক্ষুব্ধ ও অপমানিত বোধ করছেন কুনার। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, সাংসদ হিসেবে কুনার যথেষ্ট কাজ করেছেন। এখনও পর্যন্ত সাংসদ তহবিলে পাওয়া ২২ কোটি টাকা খরচও করেছেন। গত পাঁচ বছরে তাঁর সুপারিশে ভুবেনশ্বর এমস্-এ ভর্তি হয়ে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছেন ৩৫৭ জন। জটিল রোগে আক্রান্ত ২২৪ জনকে প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য পেতে সহযোগিতা করেছেন সাংসদ। তারপরও কি কুনারে ভরসা নেই গেরুয়া শিবিরের?
যদিও কুনারবাবুর এক্স হ্যান্ডলে এখনও নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ‘মোদি কা পরিবার’। এদিন সকালেও সন্দেশখালি ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর রান্নার গ্যাসের দাম কমানোর পোস্টও করেছেন। তাঁর দলত্যাগ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সম্পাদক দীনবন্ধু কর্মকার বলেন, ‘উনি দল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন বলে শুনেছি। তবে কারণ বলতে পারব না।’