বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

কেন আজও প্রাসঙ্গিক শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস?

March 12, 2024 | 4 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ দেশে চরম অরাজকতা চলছে ধর্ম নিয়ে। ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি মিশে দেশের সব জায়গায় চলছে ধর্মের নামে চরম অধর্ম। এমতাবস্থায় আজও শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের বাণী প্রাসঙ্গিক। তাঁর মন্ত্র ছিল, “যত মত তত পথ ৷” সর্বমত ও সর্বধর্ম-সমন্বয়ের এই উপদেশ ও ভাব সর্বজনবিদিত এবং বহু আলোচিত ৷ বর্তমান পৃথিবীতে মানব সভ্যতার এটিই যে রক্ষাকবচ সে-কথা চিন্তাশীল সকলেই স্বীকার করছেন৷

সাম্প্রদায়িকতা, গোঁড়ামি এবং মতান্ধতাই মানুষ মানুষে, ধর্মে ধর্মে ,সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে বিভেদের প্রাচীর তুলে দেয় ৷ তার মূলে থাকে মানুষের নিজের মত সম্পর্কে, নিজের বিশ্বাসের প্রাধান্য সম্পর্কে আত্মম্ভরিতার ভাব ৷ শ্রীরামকৃষ্ণ বুঝিয়েছিলেন, অপরের মতের প্রতি, অপরের বিশ্বাসের প্রতি , অপরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও মর্যাদার ভাব না আনতে পারলে আখেরে নিজেরই ক্ষতি ৷

তাঁর বক্তব্য হলো — অপরকে প্রেমে, সহিষ্ণুতায় ,ভাতৃভাবে ছাড়িয়ে যাও, কিন্তু দম্ভে, অসহিষ্ণুতায়, উপেক্ষায় কাউকে মাড়িয়ে যেও না ৷ জগতে প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়তো প্রাকৃতিক নিয়মেই থাকবে, মানব স্বভাবের বশেই থাকবে, কিন্তু সহযোগিতা, সম্প্রীতি ও সমন্বয়ের ভাবও তো প্রকৃতির ভাব, মানুষের ভাব ৷ আর যদি প্রতিযোগিতা বা প্রতিদ্বন্ধিতা থাকেই তবে তাকে সহযোগিতা প্রসারের জন্য ,সম্প্রীতি স্থাপনের জন্য, সমন্বয়ের বিকাশের জন্য নিয়োজিত করি না কেন । প্রতিযোগিতা ,প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক শান্তির জন্য , সমন্বয়ের জন্য।

শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন, সাবধান । দ্বেষবুদ্ধি, বিদ্বেষ-ভাব ঘৃণা যেন মনে না থাকে ৷ প্রতিটি স্তরে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা যেন তার ভিত্তি হয় ৷ এক ঈশ্বর যদি সত্য হন, তাহলে তাঁকে পাবার জন্য বিচিত্র পথের বিদ্যামানতাও তো একইভাবে সত্য হতে বাধ্য ৷ সুতরাং পথের বিভিন্নতা থাকুক না, মতের বৈচিত্র থাকুক না ৷

পৃথিবীর যতগুলি মানুষ ততগুলি ধর্মমত থাকলেই বা ক্ষতি কি ! তাতে তো ঈশ্বরকে ধরবার ,সন্ধান করবার জন্য মানুষের ব্যাকুলতাই প্রকাশ পাচ্ছে ৷ তা তো মানুষের মানসিক ও আত্মিক সুস্থতা ও সজীবতারই প্রকাশ ৷ শুধু বুঝতে হবে, এই বৈচিত্রের উৎস ও গতি একই ৷ এতে মৌলবাদ মাথা তুলতে পারবে না ৷ সহস্র সম্প্রদায় সত্বেও কারও মনে সাম্প্রদায়িকতা শিকড় গাড়তে পারবে না ৷ শ্রীরামকৃষ্ণ বুঝেছিলেন কর্ম এবং ধর্মে, ঐহিকে এবং পারত্রিকে কোন ব্যবধান নেই ৷ দ্বৈত, বিশিষ্টতাদ্বৈত এবং অদ্বৈতে কোন বিরোধিতা নেই ৷ জড় ও চৈতন্যে কোন পার্থক্য নেই ৷

তিনি আরও বলেন, হিন্দু ,মুসলমান , খ্রিস্টান মতের মূল সত্যে কোন বিভেদ নেই ৷ শৈব ,শাক্ত, বৈষ্ণব মতের উপলব্ধিতে কোন ভেদ নেই ৷ ভক্তি, জ্ঞান, কর্ম, যোগের লক্ষ্যের মধ্যে কোন ভিন্নতা নেই ৷ গার্হস্থ্য ও সন্ন্যাসের মধ্যে, মানুষ ও দেবতার মধ্যে, বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে, বস্তুবাদ ও ভাববাদের মধ্যে, ভোগবাদ ও অধ্যাত্মবাদের মধ্যে, অপরাবিদ্যা ও পরাবিদ্যার মধ্যে, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে, অতীত ও বর্তমানের মধ্যে প্রকৃত কোন দূরত্ব নেই ৷ আপাতদৃষ্টিতে বিপরীত বা বিরুদ্ধ মনে হলেও প্রত্যেকটি প্রত্যেকটির পরিপূরক ৷ তাদের চূড়ান্ত সমন্বয়-দৃষ্টান্ত তাঁর জীবন৷

বিরোধ ও বৈপরীত্য তাদের অাপাত রূপ ৷ তাদের মধ্যে সমন্বয়ের ভূমি আছে এবং সেটিই তাদের সত্যরূপ ৷ এই দৃষ্টি জগতের চিন্তাজগতে, ধর্মজগতে এবং ভাবজগতে শ্রীরামকৃষ্ণের অভিনব অবদান৷

ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জন্মতিথিতে টিম দৃষ্টিভঙ্গির সশ্রদ্ধ প্রণাম।

আজ দেশে চরম অরাজকতা চলছে ধর্ম নিয়ে। ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি মিশে দেশের সব জায়গায় চলছে ধর্মের নামে চরম অধর্ম। এমতাবস্থায় আজও শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের বাণী প্রাসঙ্গিক। তাঁর মন্ত্র ছিল, “যত মত তত পথ ৷” সর্বমত ও সর্বধর্ম-সমন্বয়ের এই উপদেশ ও ভাব সর্বজনবিদিত এবং বহু আলোচিত ৷ বর্তমান পৃথিবীতে মানব সভ্যতার এটিই যে রক্ষাকবচ সে-কথা চিন্তাশীল সকলেই স্বীকার করছেন৷

সাম্প্রদায়িকতা, গোঁড়ামি এবং মতান্ধতাই মানুষ মানুষে, ধর্মে ধর্মে ,সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে বিভেদের প্রাচীর তুলে দেয় ৷ তার মূলে থাকে মানুষের নিজের মত সম্পর্কে, নিজের বিশ্বাসের প্রাধান্য সম্পর্কে আত্মম্ভরিতার ভাব ৷ শ্রীরামকৃষ্ণ বুঝিয়েছিলেন, অপরের মতের প্রতি, অপরের বিশ্বাসের প্রতি , অপরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও মর্যাদার ভাব না আনতে পারলে আখেরে নিজেরই ক্ষতি ৷

তাঁর বক্তব্য হলো — অপরকে প্রেমে, সহিষ্ণুতায় ,ভাতৃভাবে ছাড়িয়ে যাও, কিন্তু দম্ভে, অসহিষ্ণুতায়, উপেক্ষায় কাউকে মাড়িয়ে যেও না ৷ জগতে প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়তো প্রাকৃতিক নিয়মেই থাকবে, মানব স্বভাবের বশেই থাকবে, কিন্তু সহযোগিতা, সম্প্রীতি ও সমন্বয়ের ভাবও তো প্রকৃতির ভাব, মানুষের ভাব ৷ আর যদি প্রতিযোগিতা বা প্রতিদ্বন্ধিতা থাকেই তবে তাকে সহযোগিতা প্রসারের জন্য ,সম্প্রীতি স্থাপনের জন্য, সমন্বয়ের বিকাশের জন্য নিয়োজিত করি না কেন । প্রতিযোগিতা ,প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক শান্তির জন্য , সমন্বয়ের জন্য।

শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন, সাবধান । দ্বেষবুদ্ধি, বিদ্বেষ-ভাব ঘৃণা যেন মনে না থাকে ৷ প্রতিটি স্তরে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা যেন তার ভিত্তি হয় ৷ এক ঈশ্বর যদি সত্য হন, তাহলে তাঁকে পাবার জন্য বিচিত্র পথের বিদ্যামানতাও তো একইভাবে সত্য হতে বাধ্য ৷ সুতরাং পথের বিভিন্নতা থাকুক না, মতের বৈচিত্র থাকুক না ৷

পৃথিবীর যতগুলি মানুষ ততগুলি ধর্মমত থাকলেই বা ক্ষতি কি ! তাতে তো ঈশ্বরকে ধরবার ,সন্ধান করবার জন্য মানুষের ব্যাকুলতাই প্রকাশ পাচ্ছে ৷ তা তো মানুষের মানসিক ও আত্মিক সুস্থতা ও সজীবতারই প্রকাশ ৷ শুধু বুঝতে হবে, এই বৈচিত্রের উৎস ও গতি একই ৷ এতে মৌলবাদ মাথা তুলতে পারবে না ৷ সহস্র সম্প্রদায় সত্বেও কারও মনে সাম্প্রদায়িকতা শিকড় গাড়তে পারবে না ৷ শ্রীরামকৃষ্ণ বুঝেছিলেন কর্ম এবং ধর্মে, ঐহিকে এবং পারত্রিকে কোন ব্যবধান নেই ৷ দ্বৈত, বিশিষ্টতাদ্বৈত এবং অদ্বৈতে কোন বিরোধিতা নেই ৷ জড় ও চৈতন্যে কোন পার্থক্য নেই ৷

তিনি আরও বলেন, হিন্দু ,মুসলমান , খ্রিস্টান মতের মূল সত্যে কোন বিভেদ নেই ৷ শৈব ,শাক্ত, বৈষ্ণব মতের উপলব্ধিতে কোন ভেদ নেই ৷ ভক্তি, জ্ঞান, কর্ম, যোগের লক্ষ্যের মধ্যে কোন ভিন্নতা নেই ৷ গার্হস্থ্য ও সন্ন্যাসের মধ্যে, মানুষ ও দেবতার মধ্যে, বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে, বস্তুবাদ ও ভাববাদের মধ্যে, ভোগবাদ ও অধ্যাত্মবাদের মধ্যে, অপরাবিদ্যা ও পরাবিদ্যার মধ্যে, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে, অতীত ও বর্তমানের মধ্যে প্রকৃত কোন দূরত্ব নেই ৷ আপাতদৃষ্টিতে বিপরীত বা বিরুদ্ধ মনে হলেও প্রত্যেকটি প্রত্যেকটির পরিপূরক ৷ তাদের চূড়ান্ত সমন্বয়-দৃষ্টান্ত তাঁর জীবন৷

বিরোধ ও বৈপরীত্য তাদের আপাত রূপ ৷ তাদের মধ্যে সমন্বয়ের ভূমি আছে এবং সেটিই তাদের সত্যরূপ ৷ এই দৃষ্টি জগতের চিন্তাজগতে, ধর্মজগতে এবং ভাবজগতে শ্রীরামকৃষ্ণের অভিনব অবদান৷

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata, #Hindu, #रामकृष्ण_परमहंस, #RamkrishnaParamhans, #Ramkrishna

আরো দেখুন