গরম রুটির থেকে আগের দিনের রেখে দেওয়া রুটি বেশি উপকারী
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মধ্যবিত্ত বাড়িতে একটা সময়ে সকালের জলখাবারে বাসি রুটি আর দুধ-চা খাওয়ার চল ছিল। কিন্তু এখন তো খাবার ধরনও বদলে গিয়েছে। তাই বাসি রুটির নাম শুনলে নাক কুঁচকে ফেলে তরুণ প্রজন্ম। কিন্তু জানেন কি, বাসি রুটি খেলে শরীরের ক্ষতি হওয়ার কোনও আশঙ্কা তো নেই-ই, বরং নিয়মিত বাসি রুটি খেলে ভাল থাকবে স্বাস্থ্য। এমনকি টাটকা রুটির চেয়েও বাসি রুটি অনেক বেশি উপকারী। বিশেষ করে যাঁরা দুধ-রুটি খেতে ভালবাসেন, তাঁরা অবশ্যই দুধ দিয়ে খান বাসি রুটি!
গরম-গরম রুটির তুলনায় বাসি রুটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে কম। বাসি রুটি সাধারণত আগের দিন সেঁকা হয়। যা সারা রাতে ঠান্ডা হয়ে যায়। খাওয়ার আগে ফের তা গরম করা হয়। সব মিলিয়ে ঠান্ডা-গরমের মিশ্রণে রুটির কার্বোহাইড্রেটের গঠন বদলে যায়। যা সরল গ্লুকোজে পরিণত হতে বেশি সময় লাগে। ফলে সকালবেলা হুট করে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় না। এ জন্য সকাল সকাল কাজে গিয়ে দ্রুত মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয়।
সারা রাত ঠান্ডা হওয়ার পর আবার গরম করা রুটিতে কার্বোহাইড্রেট ভেঙে যায়। ফলে সহজে হজম করা সম্ভব হয়। এ ছাড়া বাসি রুটি পাকস্থলীর ওপরও চাপ কম ফেলে। সারা রাত ধরে বাসি রুটিতে জন্ম নেয় ব্যাকটেরিয়া। তবে রুটিতে জন্ম নেওয়া এই ব্যাকটেরিয়া উপকারী। গাঁজন (ফার্মেন্টেশন) প্রক্রিয়ায় জন্ম নেওয়া এই ব্যাকটেরিয়া পাকস্থলীতে গিয়ে হজমে সাহায্য করে।
আপনার কি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে? এই সমস্যা এখন প্রায় প্রতিটি ঘরেই। দুধের সঙ্গে বাসি রুটি খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে এই অসুখ। অন্য দিকে ডায়াবিটিসের জন্যও উপকারী বাসি রুটি। কারণ বাসি রুটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
বদহজম কিংবা পেটের সমস্যায় জেরবার? দুধ দিয়ে খান বাসি রুটি। কারণ বাসি রুটিতে থাকা ফাইবার হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এমনকি নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলেও বাসি রুটি হতে পারে তার সহজ সমাধান।
সহজে রোগা হওয়ার নানা উপায় তো রয়েছেই। তবে বাসি রুটির ক্যালোরি টাটকা রুটির চেয়ে কম। অবিশ্বাস্য হলেও এ কথা সত্যি। তাই যাঁরা সহজে ওজন ঝরাতে চাইছেন, তাঁরা বাসি রুটি খেয়ে দেখতেই পারেন।
ভাবতে পারেন, বাসি রুটি যখন এত কিছু করছে, তখন নিশ্চয়ই পুষ্টিগুণে কোনও হেরফের আছে? মজার ব্যাপার হলো ধোঁয়া ওঠা গরম রুটিতে যে পুষ্টি রয়েছে, বাসি রুটিতেও প্রায় একই পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে। সামান্য দু’একটি ভিটামিনের পুষ্টিগুণ এদিক–সেদিক হলেও বাকি সব প্রয়োজনীয় বি ভিটামিন, আয়রন, ফাইবারের পরিমাণ একই থাকে।