ট্রেনের কামরাও এখন লোকসভা নির্বাচনের আঁচে উত্তপ্ত!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সামনেই লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। আর তা নিয়েই শহরের অলিগলি থেকে গ্রামেগঞ্জের পাড়ায় পাড়ায় চায়ের দোকানগুলিতে চলছে জোর রাজনৈতিক চর্চা। শুধু তাই যাতায়াতের পথেও মানুষ জনের আলোচনায় এখন লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election 2024)।
রাজনীতির এই উত্তাপ যে ট্রেনের ‘তর্কপ্রিয়’ নিত্যযাত্রীদেরও ছুঁয়ে যাবে, তা বলাই বাহুল্য। সোমবার ট্রেনে অফিসযাত্রীর ভিড়ে দেখা গেল তেমনই দৃশ্য। ডানকুনির বাসিন্দা তমাল পোদ্দার। প্রায় ২০ বছর একই সময়ে নির্দিষ্ট ট্রেনে ওঠেন তিনি। অফিস যাওয়ার পথে তিনি ও তাঁর তিন সঙ্গী মেতে থাকেন তাস নিয়ে। চারটি স্টেশন পেরনোর মধ্যে তিন হাত ব্রিজ খেলা হয়ে যায়। সোমবারও শুরুটা সেভাবেই হয়েছিল। ১১টা ২০ মিনিটের বারুইপাড়া লোকাল আধঘণ্টা লেটে ডানকুনি ঢুকতেই হুড়মুড়িয়ে উঠে তাস বার করে ফেলেন যথারীতি। কিন্তু এক হাতও খেলা শেষ হল না! কারণ, ততক্ষণে তৃণমূলের ব্রিগেড নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে জোর আলোচনা। তমালবাবুর এক সঙ্গী বলে উঠলেন, তৃণমূল এবার ৪২টি কেন্দ্রেই ভালো প্রার্থী দিয়েছে। ওরাই ভালো করবে। অমনি তাস থেকে নজর সরিয়ে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন তমালবাবু। ‘তৃণমূলকে কেউ আর ভোট দেবে না’ বলে সরাসরি তর্ক জুড়ে দিলেন তিনি। এরপর ভোটের আলোচনা কার্যত সংক্রামিত হয়ে পড়ল গোটা কামরায় (Train compartment)। মাথায় উঠল তমালবাবুদের তাস খেলা।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে বহরমপুরে হারাতে পারবেন ‘হার্ড হিটার’ ইউসুফ পাঠান? এই প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক চলল। এক কোণা থেকে এবার শুরু হল তমলুক কেন্দ্র নিয়ে চর্চা। এই কেন্দ্রে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য কি তুলনামূলক দুর্বল হয়ে গেলেন? এই আলোচনা বাড়তে বাড়তে ছুঁয়ে গেল নিয়োগ দুর্নীতি এবং অভিজিৎবাবুর বিতর্কিত নানা মন্তব্যকেও। একজন বললেন, তমলুকে তৃণমূল ‘ফাটকা’ খেলতে চাইছে। প্রাক্তন বিচারপতিকে হারাতে দেবাংশুই যোগ্য বলে মত দিলেন অনেকে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে ভূতপূর্ব দম্পতি সৌমিত্র খাঁ ও সুজাতা মণ্ডলের লড়াই নিয়ে কিঞ্চিত রসিকতাও করলেন কেউ কেউ। এসবের মধ্যেই ট্রেন ঢুকে পড়ল হাওড়া স্টেশনে। হুড়মুড়িয়ে নামতে শুরু করল জমাট বেঁধে থাকা ভিড়।