পুরনোদের সরিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা, শুভেন্দুকে ঘিরে ক্ষোভ BJP-র অন্দরে?
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: একের পর এক তালিকা প্রকাশ্যে আসছে কিন্তু বাংলা ব্রাত্যই থেকে যাচ্ছে। কবে ঘোষিত হবে গেরুয়া প্রার্থীদের নাম? কবে শুরু হবে প্রচার? একদিকে প্রার্থী নিয়ে কোন্দল, অন্যদিকে বিদ্রোহ। লোকসভা ভোটের মুখে বঙ্গ বিজেপির কোন্দল চরমে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর অধিকারীর বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, নিজের পছন্দের লোকদের টিকিট দিয়ে পুরনোদের সরিয়ে দলের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছেন তিনি।
দমদম থেকে কৃষ্ণনগর, বাংলাজুড়ে দিকে দিকে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ছে। সেভ বেঙ্গল বিজেপি শুভেন্দুকে ‘লোডশেডিং বিধায়ক’ বলে কটাক্ষ করেছে সমাজ মাধ্যমে। তাদের পেজে লেখা হয়েছে, বঙ্গ বিজেপিকে শেষ করতে এসেছেন শুভেন্দু। কার লোক টিকিট পাবে; তা নিয়ে শুভেন্দু ও সুকান্তর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। কোন্দলের কারণেই, বাংলার বাকি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারছে না বিজেপি। কোনওরকমে জোড়াতালির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে চলেছে বিজেপি, এমনটাই খবর। হয়ত আজ রবিবার বাংলার বাকি প্রার্থীদের ঘোষণা করতে পারে বিজেপি।
শনিবার রাতে রাজ্য বিজেপির দুই নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন দিল্লির নেতারা। দমদম লোকসভা কেন্দ্রে শুভেন্দু শীলভদ্র দত্তকে টিকিট দিতে চাইছেন। বরানগর বিধানসভার উপনির্বাচনে সজল ঘোষকে চান শুভেন্দু। কিন্তু দমদম ও বরানগর এলাকার আদি কর্মীরা কার্যত ক্ষুব্ধ এহেন সিদ্ধান্তে। ‘সেভ বেঙ্গল বিজেপি’ ও বিজেপির কর্মীবৃন্দ ওই অঞ্চলে পোস্টার দিয়েছে। পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘দমদম লোকসভা কেন্দ্র ও বরানগর বিধানসভা কেন্দ্র হাতছাড়া করার চক্রান্তকারী শুভেন্দু অধিকারীর চাপিয়ে দেওয়া প্রার্থীকে মানছি না, মানব না’।
ভোটের মুখে কৃষ্ণনগরের রানিমা অমৃতা রায় বিজেপিতে যোগ দিতেই দলের অন্দরে বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। সমাজ মাধ্যমেও সেই বিদ্রোহ চোখে পড়ছে। শুভেন্দুকে নিশানা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও পোস্টারে লেখা হয়েছে, পয়সা নিয়ে কেন অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে প্রার্থী করা হল কেন? সাধারণ জনতা জবাব চায়। নিচে লেখা বিজেপির পুরনো কর্মীবৃন্দ। আবার লেখা হচ্ছে, কৃষ্ণনগরের রানিমা অমৃতা রায়ের কৃষ্ণনগরের সমাজে অবদান কী আছে? উনি যদি ভোটে হারেন তবে কি লোডশেডিং বিধায়ক (শুভেন্দু) দায় নেবেন?
কান পাতলে শোনা যায়, শুভেন্দু অধিকারীর বাধাতেই মেদিনীপুর থেকে দিলীপ ঘোষের প্রার্থী হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দিলীপের অনুগামীদের সাফ কথা, দাদা প্রার্থী না হলে বিক্ষোভ দেখাবেন তাঁরা। ভোটের কাজেও নামবে না। সূত্রের খবর, মেদিনীপুরে এবার শুভেন্দু চাইছেন প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষকে প্রার্থী করতে। দিল্লির নেতাদের বুঝিয়ে কাজ প্রায় হাসিল করেও ফেলেছেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু বিজেপির বড় অংশের মধ্যে ভারতী ঘোষ সম্পর্কে ক্ষোভ রয়েছে।
রায়গঞ্জের বিদায়ী সাংসদ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরির প্রার্থী হওয়া অনিশ্চিত। কলকাতায় চলে এসেছেন দেবশ্রী। রায়গঞ্জ শহর মণ্ডলের সভাপতির অভিযোগ, দেবশ্রী চৌধুরি কয়েকজনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দলের সম্মান নষ্ট করেছেন। জেলার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। রায়গঞ্জে ভূমিপুত্র প্রার্থীর দাবিতে বিজেপি অফিসে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন দলের একাংশ। দার্জিলিংয়ে প্রার্থী হিসেবে শ্রিংলার নাম ঘোষণা কেবল সময়ের অপেক্ষা। বিদায়ী সাংসদ রাজু বিস্তার অনুগামীদের ক্ষোভ ফেটে পড়ছে। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও রাজুর হয়ে সওয়াল করেছিলেন। রাজুকে প্রার্থী না করলে দলের অনেকে প্রচারে নামবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে। পাহাড়ে বিজেপির মধ্যেই বিভাজন তৈরি হয়ে গিয়েছে। জিএনএলএফও জানিয়েছে বিস্তা প্রার্থী হলে তবেই বিজেপি সমর্থন পাবে। বিদায়ী সাংসদ জন বারলাকে এবার প্রার্থী করেনি দল। আলুপুরদুয়ারে প্রার্থী হয়েছেন বিধায়ক মনোজ টিগ্গা। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বারলা ভোট প্রচারে তাঁর দেখা মিলছে না।