হোলিকা দহন বা ন্যাড়াপোড়া আসলে কী? নেপথ্যে পৌরাণিক কাহিনিটি জানেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি:
‘আজ আমাদের ন্যাড়াপোড়া কাল আমাদের দোল,
পূর্ণিমাতে চাঁদ উঠেছে বল হরি বোল।’
আবহমানকাল যাবৎ এভাবেই ছড়া কেটে চলেছে বঙ্গ-সন্তানরা। আজ ন্যাড়াপোড়া। দোলের আগের সন্ধ্যায় বিভিন্ন জায়গায় আজও পালিত হয় ন্যাড়াপোড়া বা চাঁচর উৎসব। যদিও হালে বহর কমেছে। শহরে তো কমেছেই, শহরতলি-মফস্বলেও কমছে। যদিও গ্রামাঞ্চলে চাঁচর বহালতবিয়তে বিদ্যমান। প্রকৃতির নিয়মে শীতের শুকনো পাতা ঝরতে থাকে। ঝরে যাওয়া শুকনো পাতা পুড়িয়ে নতুনের সূচনাই হল চাঁচরের মূল লক্ষ্য। একে কেউ কেউ ন্যাড়াপোড়া বলে, আবার অনেকেই বুড়ির ঘর বা বুড়ির ঘর পোড়ানো বলেন। শুকনো খড়কুটো, পাতা দিয়ে বুড়ির ঘর তৈরি হয়। তা জ্বালিয়েই ন্যাড়াপোড়ার উৎসব পালিত হয়।
দেশের হিন্দীভাষী বিভিন্ন রাজ্যে বহু বছর ধরেই চাঁচরে হোলিকার কুশ পুতুল পোড়ানোর রেওয়াজ চলে আসছে। প্রচলিত পৌরাণিক ইতিহাস বলে, পাঞ্জাবের মুলতান অঞ্চলের প্রহ্লাদপুরী মন্দিরে হোলিকা দহন উৎসবের সূচনা হয়েছিল। আদিম শবর জাতির জীবনচর্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল চাঁচর৷ স্কন্ধ পুরাণে রয়েছে হোলিকার উৎপত্তির কাহিনী। ঋষি কাশ্যপ ও দিতির দুই পুত্র হিরণ্যাক্ষ ও হিরণ্যকশিপুর প্রচন্ড অত্যাচারী ছিলেন। তাদের একমাত্র বোন হোলিকাও ভাইদের মতোই ছিলেন। হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন বিষ্ণু ভক্ত। সেই অপরাধে তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারবার ফন্দি আঁটেন হোলিকা। তবে তিনি সফল হননি। উল্টে সেই আগুনে হোলিকা নিজেই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। সেদিন থেকেই অশুভ শক্তির বিনাশের প্রতীক হিসেবে হোলিকা দহন অর্থাৎ চাঁচর বা ন্যাড়াপোড়া পালিত হচ্ছে। আজকাল আধুনিকতায় ছোঁয়ায় হারিয়ে এ সব রীতি-রেওয়াজ হারিয়ে যেতে বসেছে।