শুধু রাধাকৃষ্ণ নয়, দোল উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন শিব-পার্বতীও?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দোল নিয়ে কিংবদন্তির শেষ নেই। দোলের উল্লেখ পুরাণেও রয়েছে। দোলকে ঘিরে একাধিক পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। দোল প্রচলনের নেপথ্য কাহিনী হিসেবে ভক্ত প্রহ্লাদের কাহিনী খুবই জনপ্রিয়। ভাগবত পুরাণে এর উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু দোল হয় বসন্তকালে, বাংলায় বসন্তকাল হল উৎসব, পালা-পার্বণের সময়। এ সময়কে শৈব আরাধনার সময় বললেও ভুল বলা হয় না। রঙের উৎসব দোলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে শিব-পার্বতীও। যার প্রমাণ রয়েছে পুরাণে। প্রাচীনকালে দোল ছিল মদনোৎসব। পুজো, আরাধনার পাশাপাশি প্রেমিক-প্রেমিকার মিলন উৎসব হিসেবেও এই তিথিটি উদযাপন করা হত।
শিবপুরাণে অনুযায়ী, দক্ষযজ্ঞের পর অপমানিত সতী প্রাণত্যাগ করলেন। দুঃখে ক্রোধে ধ্যানে বসলেন দেবাদিদেব শিব। সতীর জন্ম হল হিমালয়কন্যা উমা রূপে। শিবের ধ্যান ভাঙানোর জন্য কামদেব মদনের সঙ্গে যোগ দিলেন উমা। মদনের বাণে শিবের ধ্যান ভাঙল, কিন্তু শিবের ক্রোধে মদন ভস্ম হয়ে গেলেন। দিনটি ছিল ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী। স্বামীর মৃত্যুতে শোকাতুর হয়ে পড়েন কামদেবের স্ত্রী রতিদেবী। রতি শিবের ধ্যান আরম্ভ করেন। রতির দুঃখে প্রকৃতিও বিষণ্ণ হয়ে পড়ে। টানা সাতদিন ধ্যানের পর রতির প্রার্থনায় শিব সন্তুষ্ট হন এবং মদনদেবের প্রাণ ফিরিয়ে দেন। প্রকৃতিও ফের রঙিন হয়ে ওঠে। দিনটি ছিল ফাল্গুন পূর্ণিমা। পুরাণ মতে, মদনের পুনর্জন্মের দিনটিই ছিল দোল পূর্ণিমা। তারপর থেকেই ওই তিথিতে রঙের উৎসব পালিত হয়। দোল বসন্তের উৎসব। শিমুল-পলাশের প্রকৃতিও রঙিন হয়ে ওঠে। গাছপালা রঙিন হয়ে ওঠে, নতুন ফল ফোটে, নতুন পাতা আসে। বাংলায় রাধাকৃষ্ণের মিলনকে কেন্দ্র করেই দোল উৎসব পালিত হয়, তবে পৌরাণিক ইতিহাসে অন্য কাহিনীও মিশে রয়েছে।