NIA-CBI বিজেপির ভাই-ভাই, পুরুলিয়ায় মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মমতা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রবিবার থেকে জঙ্গলমহলে তৃণমূল সুপ্রিমোর (TMC Supremo) নির্বাচনী সভা আরম্ভ হল। আজ, পুরুলিয়ার (Purulia) লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর (Shantiram Mahato) সমর্থনে কাশীপুরে সভা ছিল তাঁর। প্রায় ২ ঘণ্টা দেরিতে পুরুলিয়ায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) জনসভা শুরু হয়। কপ্টারে বিভ্রাটের কারণে তিন ঘণ্টা গাড়িতে সড়কপথে দুর্গাপুর থেকে পুরুলিয়ায় আসেন তিনি। যার জেরে সভা শুরু হতে দেরি হয়। বেলা সাড়ে ১১টার সভা শুরু হয় পৌনে দুটো নাগাদ। সভামঞ্চ থেকে মমতা জানান, “আসার সময় শুনলাম, হঠাৎ করে আমাদের হেলিকপ্টারটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। ভাবছিলাম কীভাবে আসব। তার পর তিনঘণ্টা জার্নি করে এলাম। দেরি হওয়ার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।” বক্তব্য রাখতে উঠেই মোদী গ্যারান্টি নিয়ে এক হাত নেন মমতা। বলেন, আমাদের গ্যারান্টি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিনামূল্যে রেশন। আপনার গ্যারান্টি মানে সিবিআই (CBI)। মোদীবাবুর গ্যারান্টি মানে নোটবন্দি, বেকারত্ব। একটা দানবীয় সরকার। অশুভ সরকার।
এদিন কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়ে ফের একবার আক্রমণ শানান মমতা। তৃণমূল বলেন, মানুষ প্রতিবাদ করলে এনআইএকে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মধ্যরাতে মহিলা ঘরে ঘুমাচ্ছেন। গদ্দারের এলাকায় মধ্যরাতে পুলিশকে না জানিয়ে চলে গেল। আগে পুলিশের উর্দি পরে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে অনেকেই বদমায়েশি করেছে। মেয়েরা কী করে বুঝবেন? মা-বোনেরা প্রতিবাদ করলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ডায়েরি করা হল। বলছে তৃণমূলের সব বুথ এজেন্টদের গ্রেপ্তার কর।
আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়ে মমতা বলেন, এক দিকে এনআইএ (NIA), এক দিকে সিবিআই, বিজেপির ভাই ভাই। ইডি আর ইনকাম ট্যাক্স। বিজেপির টাকা তোলার বক্স। আমাদের আছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। ওঁদের আছে ইডির ভাণ্ডার। আমাদের আছে কৃষির ভাণ্ডার। ওদের সিবিআই ভাণ্ডার। বলছে বিজেপি কর। কেন বিজেপি করবে? অত্যাচারী সরকার।
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন, কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করুন, এটাই চায় বিরোধীরা।
পুরুলিয়ার সভামঞ্চ থেকেই তৃণমূল নেত্রী জানালেন, পানীয় জলের সমস্যা মেটানো হবে। রাজ্য সরকারই করবে। ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে জল।
এদিনও কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে সরব হন মমতা; বললেন, বাড়ি দেওয়ার জন্য ১১ লক্ষ বাড়ির তালিকা পাঠিয়েছিলেন তিনি। ভোটের আগে কল সেন্টার থেকে সে সব বাড়িতে ফোন করছে। ফোন করে বলছে, নতুন করে বিজেপিতে আবেদন কর, ঘর পাবে। তিনি আরও জানান, ভোট হলে ১১ লক্ষ মানুষের ঘর তৈরি করবেন। আদিবাসী, মাহাতোদের নিয়ে একসঙ্গে থাকতে চান বলেও জানান মমতা।
আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়া যাবে না। তাঁদের জমি তাঁদের হাতেই থাকবে। অরণ্যের তাঁরাই বড় সম্পদ, রবিবার সাফ জানান মমতা। এদিন তৃণমূল নেত্রী বলেন, আদিবাসী স্কুল, আশ্রমে যে ছেলে-মেয়েরা থাকতেন, তাঁরা আগে ১০০০ টাকা ভাতা পেতেন। এখন ১,৮০০ টাকা ভাতা পান। তাঁদের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায় টাকা। বন পাট্টা দেওয়া হচ্ছে। সাঁওতালি ভাষাকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য তফশিলী আদিবাসীরা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন। বিদেশে গেলে ২০ লক্ষ টাকা পান তাঁরা।
তৃণমূলের শাসনে পুরুলিয়া বদলে গিয়েছে বলেও জানান তৃণমূল নেত্রী। তিনি বললেন, এখন পুরুলিয়ায় কত মানুষ আসছেন। হোম স্টে তৈরি হচ্ছে।