রাজ্যসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের অপমান! বনগাঁ, বাগদা, ঠাকুরনগরে পথে নেমে প্রতিবাদ ক্ষুব্ধ মতুয়াদের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মতুয়াদের ভগবান, তাঁদের আরাধ্য দেবতা হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরকে (Harichand and Guruchand Thakur) অপমান করার প্রতিবাদে পথে নামলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন। গোটা বাংলা জুড়েই প্রতিবাদ বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তাঁরা। বুধবার বনগাঁ, বাগদা, ঠাকুরনগর এবং বাংলার একাধিক জায়গায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন মতুয়ারা। মতুয়াদের প্রতিবাদে সামিল হয়েছে তৃণমূল। বুধবার মতুয়া সাধু গোঁসাইদের সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন বনগাঁ (Bangaon) লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস (Biswajit Das)। মতুয়াদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের প্রতিবাদে, বৃহস্পতিবার বনগাঁ ও বাগদায় প্রতিবাদ মিছিল করেছে তৃণমূল। অসংখ্য মতুয়া ভক্ত এদিনের মিছিলে হাঁটেন। মিছিলে দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar), কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বনগাঁ লোকসভার বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) কুশপুতুল দাহ করা হয়।
বুধবার রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে শপথ নেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর। হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে তিনি শপথ নিতে যাওয়া মাত্র, বাঁধা দেন উপরাষ্ট্রপতি। আরাধ্য দেবতার নামে শপথ নিতে পারেননি তিনি। সেখানেই প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন তিনি। সাংবাদিকদের বলেন, লোকসভার সাংসদ হিসেবে, তাঁর আরাধ্য ঠাকুরদের নামে তিনি শপথ নিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্যসভায় তা পারা গেল না। অপমানের জবাব মতুয়ারাই দেবেন।
মতুয়া মহাসঙ্ঘের কার্যকরী সভাপতি শচীন সরকার বলেন, বিজেপি (BJP) পরিকল্পনা করে মতুয়াদের দেবতাকে অবজ্ঞা করেছে। আগামীদিনে মতুয়ারা এর জবাব দেবে। মতুয়া (Matua) গোঁসাই সুবল বিশ্বাসের অভিযোগ, শান্তনু এবং ওর বাবা যখন শপথ নিয়েছিল, তখন হরিচাঁদ ঠাকুরের নামেই শপথ নিয়েছিল। এবার রাজনৈতিক স্বার্থে বাধা দেওয়া হল। তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, রাজ্যপাল থাকাকালীন তৃণমূলকে হারাতে চেয়েছিলেন ধনখড়। না পেরে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছেন।
বনগাঁ ত্রিকোণ পার্ক থেকে এদিন প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মতিগঞ্জ ঘড়ির মোড় হয়ে বাটার মোড়ে গিয়ে শেষ হয় মিছিল। মমতা ঠাকুর, মতুয়া মহাসঙ্ঘের কার্যকরী সভাপতি শচীন সরকার, তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস, পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব ও মতুয়া ভক্তরা মিছিলে পা মেলান। মমতা ঠাকুরের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানায় মতুয়া ভক্তরা। বিজেপির বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তাঁরা। মমতা ঠাকুর বলেন, এটা বিজেপির প্রতিহিংসা। আরাধ্য দেবতার নামে শপথ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে আবারও শপথ নিতে বাধ্য করা হয়। বলা হয় হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম নেওয়া যাবে না। যা মতুয়াদের কাছে লজ্জা-অপমানের।