রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে দিল্লি দখল করতে চাইছে বিজেপি?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দিল্লির মতো ক্ষুদ্র একটি রাজ্যকে নিয়ে মোদী সরকার একটি পরীক্ষা চালাচ্ছে, কীভাবে রাষ্ট্রপতি শাসনের মাধ্যমে সরকার চালানো যায়। আগামী দিনে সব বিরোধী রাজ্যের ভাগ্যে এটাই হতে চলেছে। মনে করছে আম আদমি পার্টি।
ভোটে জয়-পরাজয় বহুদিন ধরেই বিজেপির কাছে টেনশনের কোনও ব্যাপার নয়। জিতে সরকার এমনিই হবে। আর হারলে? জয়ী দল বা জোটের বিধায়ক ভাঙিয়ে অপারেশন লোটাস। কিন্তু লোকসভা ভোটপর্বের মধ্যে সরকার দখল? এই বিস্ফোরক অভিযোগ এবার করেছে আম আদমি পার্টি। শুক্রবার তারা বলেছে, ঘুরপথে ক্ষমতা দখলের জন্য দিল্লিতে অঘোষিত রাষ্ট্রপতি শাসন (President’s Rule) চালু করে দিয়েছে বিজেপি (BJP)।
আপ মন্ত্রী অতিশী মার্লেনার (Atishi Marlena) দাবি, ‘অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার হওয়া বিজেপির রাজনৈতিক চক্রান্তের অঙ্গ। ঠিক যেমন হেমন্ত সোরেনকে গ্রেপ্তার করা। আমরা জানতে পারছি এবং সরকারের অন্দরে কাজ করার সময় লক্ষ্য করছি, মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক লেফটেন্যান্ট গভর্নরের মাধ্যমে পরোক্ষে দিল্লি শাসন শুরু করে দিয়েছে।’ আতিশী বলেছেন, ‘লেফটেন্যান্ট গভর্নর দিল্লি সরকারের মন্ত্রীদের নিয়ম করে ডেকে পাঠাচ্ছেন। প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ কাজকর্মের নির্দেশ দিচ্ছেন। এমনকী, কোনও ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতেই বারণ করে দেওয়া হচ্ছে মন্ত্রীদের। কোনও নতুন নীতি কিংবা সিদ্ধান্ত নেওয়ার হলে আগে জানাতে হবে লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে। এখানেই শেষ নয়, অফিসারদেরও বলা হচ্ছে তাঁরা যেন মন্ত্রীদের কথা না শোনেন।’
অতিশীর পাল্টা, ‘১১ বছর ধরে নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে হেরেই চলেছেন। সরকার দখল করতে পারছেন না। রাগ তো হবেই!’ কেন্দ্রশাসিত রাজ্যগুলিতে রাজ্যপালের স্থলাভিষিক্ত পদ হল উপ রাজ্যপাল বা লেফটেন্যান্ট গভর্নর। সেই পদই পরোক্ষে ‘কেন্দ্রীয় শাসনে’র প্রধান মাধ্যম। আতিশীর অভিযোগ, ‘বহু দপ্তরে অফিসার নেই। শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। নিয়ম করে আইএএস অফিসারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ, সেইসব অফিসারদের শূন্যপদে নিয়োগ হয়নি। দিল্লির আপ সরকারকে ঠুঁটো করে দেওয়া হয়েছে। আসলে দিল্লির মতো ক্ষুদ্র রাজ্যকে নিয়ে মোদি সরকার একটি পরীক্ষা চালাচ্ছে, কীভাবে রাষ্ট্রপতি শাসনের মাধ্যমে সরকার চালানো যায়। আগামী দিনে সব বিরোধী রাজ্যের ভাগ্যে এটাই হতে চলেছে। দিল্লির অফিসারদের হুমকি দেওয়া হয়েছে, কেউ মন্ত্রীদের নির্দেশ পালন করবেন না। লেফটেন্যান্ট গভর্নরের নির্দেশে বহু সরকারি অফিসার এখন আর দপ্তরে আসছেন না। তাঁরা বলছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়েছে। তাই এখন সরকারের কোনও কাজ করা যাবে না। এভাবে আসলে মোদী সরকার চাইছে দিল্লির সব পরিষেবা বন্ধ হোক। আর সেটাই হচ্ছে। ইচ্ছাকৃতভাবে রাস্তা মেরামতি আটকে দেওয়া হচ্ছে, যাতে দিল্লিবাসীর ক্ষোভ তৈরি হয় আম আদমি পার্টির উপর। এসবই হল মোদী সরকারের ষড়যন্ত্র। রাষ্ট্রপতি শাসন পরোক্ষে চালু হয়ে গিয়েছে।’