গনিখানের গড়ে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস-বিজেপি-সিপিএমকে এক বন্ধনীতে রেখে সুর চড়ালেন মমতা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রবিবার মালদহের দুটি কেন্দ্রে জনসভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে মালদহ দক্ষিণের সুজাপুরে এবং তার পরে মালদহ উত্তরের (Malda Uttar) হবিবপুরে।
সুজাপুরের জনসভা থেকে বরকত গনিখান চৌধুরীর নাম নাম নিয়েই কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মালদহবাসীকে সতর্ক করে মমতা বলেন, “বাংলায় বিজেপির দুটো চোখ, একটা সিপিএম আরেকটা কংগ্রেস!”
মমতার কথায়, “বরকতদাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। তিনি যতদিন ছিলেন আপনারা কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন। আমরা খুশি হয়েছি। কিন্তু এখনও কেন বার বার ওদেরই ভোট দেবেন? মৌসম বেনজির নূরকে তো আমরাই জিতিয়েছিলাম। কিন্তু লোকসভায় গিয়ে যে চুপ করে বসে থাকে, মানুষের কথা বলে না, তাঁকে কেন প্রার্থী করব? মহুয়া মৈত্রকে দেখুন। সংসদে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলতো বলে ওকে তাড়িয়ে দিয়েছে।”
বর্তমানে মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ আবু বরকত আতাউর গনি খান চৌধুরীর ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালুবাবু)। ২০০৯ সাল থেকে এই কেন্দ্রে জিতে আসছেন তিনি। এবারে এখানে তৃণমূল প্রার্থী করেছে শাহনওয়াজ় আলি রেইহানকে।
মমতা বলেন, “মনে রাখবেন, মালদহ লোকসভা কিন্তু আগে কখনও তৃণমূল পায়নি। একুশের বিধানসভায় আপনারা আমাদের ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন বলে বিজেপিকে আটকাতে পেরেছিলাম, তাহলে এবারেও নয় কেন?”
মমতা আরও বলেন, ‘‘মনে রাখবেন, এই ইন্ডিয়া জোট তৈরি করেছি আমি, নামটাও আমি দিয়েছি, যা দেখে মোদী থরথর করে কাঁপেন। দিল্লিতে যদি সত্যিই বিজেপিকে রুখতে চান, তা হলে বাংলায় ভোট কাটাকাটির রাজনীতিতে দয়া করে এ বার যাবেন না। আমরাও যাইনি কোথাও। আমরা ইচ্ছে করলে অনেক জায়গায় লড়াই করতে পারতাম। আমাদের একটাই জায়গা বাংলা। এই বাংলা থেকে যদি বিজেপিকে রুখতে না পারি…! সবাই লেজ গুটিয়ে পালালেও, তৃণমূলই নেতৃত্ব দিয়ে ইন্ডিয়াকে ক্ষমতায় আনবে। অন্য কোনও দল নয়।’’
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এক বিতর্কিত মন্তব্যের পালটা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, শাঁখা-পলা কী জানেন? এসব বাদ দেওয়া নিয়ে কথা বলছেন? কোনওদিন জানেন এসবের মাহাত্ম্য? উনি যা বলেছেন, আমি তা উচ্চারণ করতে চাই না। আমি ওসবে বিশ্বাসও করি না। কিন্তু আমি যতদিন থাকব, ততদিন ঐক্য, শান্তি প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে যাব। আমার কাছে সতী-সাবিত্রী-সীতা আর জাহানারা-রোশেনারার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।
হবিবপুরে নির্বাচনী প্রচারে গেছিলেন তৃণমূল নেত্রী সভা মঞ্চ থেকে নাগরিকত্বের ইস্যুতে বিজেপি সরকারকে ফের নিশানা করে বলেন, ”এনআরসি হলে সবাইকে তাড়িয়ে দেবে। বলবে জেলে গিয়ে থাকো। সিএএ-তে দরখাস্ত করলেই সে বিদেশি হয়ে যাবে। ভয়তে কেউ দরখাস্তও করছে না।”
নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, ”এতদিন যাঁদের ভোটে জিতে এল, তারাই নাকি অনুপ্রবেশকারী। সবাই যদি অনুপ্রবেশকারী হয় তাহলে আপনিও অনুপ্রবেশকারী প্রধানমন্ত্রী। আমিও তাহলে অনুপ্রবেশকারী মুখ্যমন্ত্রী। সব পঞ্চায়েত, বিধানসভাও তাই!” তৃণমূল নেত্রী বলছেন, ভোটের সময়ে এদেরই ভোট নিয়ে জেতে। তারপর সব ভুলে যায়, মানুষকে বোকা বানায় বিজেপি। ছলনা করে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে নানা জায়গা ঘুরে বেড়ায় নেতারা।