রাতে গণনাকেন্দ্রে ঢুকে মেশিন বদলে দিচ্ছে BJP! ভূতুড়ে Turn out বৃদ্ধিতে সন্দেহ মমতার
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বুধবার মালদহের ফরাক্কা ও মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে জোড়া সভা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মালদহ দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রেইহানের সমর্থনে প্রথম সভাটি করেন ফরাক্কায়, বল্লালপুর কৃষক মান্ডির মাঠে। মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় বহরমপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন তারকা ইউসুফ পাঠানের সমর্থনে দ্বিতীয় সভা করেন।
ভোটের হার হঠাৎ করেই বেড়ে যাওয়া নিয়ে তোপ দাগেন মমতা। কমিশনের তরফে দেওয়া ভোট শতাংশের হিসাব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে মমতা বলেন, “রাতে গণনাকেন্দ্রে ঢুকে তালা ভেঙে মেশিন বদলে দিচ্ছে। যেখানে বিজেপি বেশি ভোট পেয়েছে, সেখানকার ইভিএম এখানে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এটা নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ দানা বাঁধছে। আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। কমিশনের কাছে আমার অনুরোধ গণতন্ত্রের নিরাপত্তা বজায় রাখুন মানুষের স্বার্থে। মানুষের এই প্রশ্নের উত্তর দিন।”
বিরোধী দলের উদ্দেশ্যে মমতার অনুরোধ, ইভিএম মেশিনের হিসাব রাখতে, খেয়াল রাখতে। দেশে ১৯ লক্ষ ইভিএমের খোঁজ নেই। সেগুলি বিজেপি (BJP) এখন কাজে লাগাচ্ছে। আমি কমিশনের কাছ থেকে ইভিএমের সংখ্যা, ভোটারের সংখ্যা জানতে চাই। সব বিরোধী দলের এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত এবং প্রশ্ন তোলা উচিত। দিনের প্রথম নির্বাচনী সভায় ফারাক্কায় মমতা বলেন, “রাত সাড়ে ৯টায় শুনলাম ৫.৭৫ শতাংশ ভোট বাড়িয়ে দিয়েছে। কমিশন নোটিস জারি করেছে। বিজেপির ভোট যেখানে কম, সেখানে ভোট বাড়িয়ে দিয়েছে। ইভিএম কারা বানিয়েছে, সংখ্যাটা বাড়ল কী করে, কত ভোটার, কত মেশিন, আমরা জানতে চাই। কমিশনকে বলছি, মানুষের সন্দেহ দূর করুন। নিরপেক্ষ হোক কমিশন। আসল সত্যি জানাতে হবে।”
বহরমপুরের সভা থেকে বিজেপিকে বিদায়ের ডাক দিয়ে মমতা বলেন, “বিজেপিকে কেউ একটি ভোটও দেবেন না। ওরা বাংলাকে বঞ্চনা করে। বাংলায় টাকা দেয় না। ওরা ২৬ হাজার মানুষের চাকরি খেয়ে নিয়েছে। চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই। চাকরি খেয়ে নিচ্ছেন। আমার কাছে সরকারে এখনও ১০ লক্ষ চাকরি পড়ে আছে। চাকরি দিতে গেলেই কোনও না কোনও এজেন্সি পাঠিয়ে আটকে দিচ্ছে। ওদের একটা ভোটও দেবেন না।”
মহম্মদ সেলিমকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, মুর্শিদাবাদে সেলিম দাঁড়িয়েছেন সংখ্যালঘু ভোট কাটার জন্য। অধীর, সেলিম দু’জনেই চান সংখ্যালঘু ভোটকে হাতিয়ার করতে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সভাকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, পরশু বিজেপির সভাপতি নড্ডা এলেন এখানে। অধীরের নামও মুখে আনলেন না। আসলে বিজেপির সবচেয়ে বড় সমর্থক অধীর। ভেবেও আমার লজ্জা হয়। এ বার আর ওঁকে ভোট দেবেন না। অধীর চৌধুরীর নাম না করে মমতা বলেন, “ওঁর নাম বলতে আমার ভাল লাগে না। ‘ইন্ডিয়া’র বড় গদ্দার উনি। সকালে বিজেপির পা ধরেন, বিকেলে সিপিএমের পা ধরেন, সন্ধ্যায় নিজের পা ধরেন। লোকসভায় উনি বিরোধী দলনেতা। নেতা তো মানুষের ছাতা। উনি ছাতা হয়ে কোন কাজ করেছেন?”
এদিন ফারাক্কার সভা থেকেও এক যোগে সিপিএম, কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “বাংলায় বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে সিপিএম, কংগ্রেস। আমি দেশের কথা বলব না। ওখানে আমরা জোটে আছি। কিন্তু সিপিএম, কংগ্রেসকে বাংলায় ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে সমর্থন করা।”
কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন, “কেন্দ্রের কাছে বাংলা দুয়োরানি। কারণ এখানে সংখ্যালঘু বেশি, তফসিলি বেশি। বাংলাকে ওরা টাকা দেয়নি। আমাদের জনসংখ্যা গুজরাতের চেয়ে অনেক বেশি। ফরাক্কা ব্যারেজ নিয়ে যখন চুক্তি হল, ৭০০ কোটি টাকা দেবে বলে কেন্দ্র কথা দিয়েছিল। একটা পয়সা দেয়নি।”
ফরাক্কা থেকে মমতা ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন, ভোট মিটলেই বিড়ি শ্রমিকদের বেতনবৃদ্ধির বিষয়টি দেখবেন তিনি। মমতা বলেন, “বিড়ি শ্রমিকরা আগে কিছুই পেতেন না। এখনও যা পাচ্ছেন, সেটা তাঁদের জন্য যথেষ্ট নয়। আসলে এগুলো প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রি। তা সত্ত্বেও আমি আমার শিল্পমন্ত্রী এবং শ্রমমন্ত্রীকে বলব, সবার সঙ্গে কথা বলতে। যাতে সবদিক থেকে সুরাহা বের করা হয়।”