শান্তনু জিতলে বনগাঁর মানুষ আরও পিছিয়ে পড়বে, বলছেন প্রাক্তন ‘মেন্টর’
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আদতে তিনি বনগাঁর গাইঘাটার চাঁদপাড়ার বাসিন্দা। অরবিন্দ বিশ্বাস কলেজ জীবনে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। পরে দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে এসে বসবাস শুরু করার সময় থেকেই শুরু জনসঙ্ঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। ১৯৭৫ সালে তিনি জনসঙ্ঘে যোগ দেন। দীর্ঘ কয়েক দশক দিল্লির রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন অরবিন্দবাবু। করেছেন বাজপেয়ির হয়ে প্রচার, দক্ষিণ দিল্লির কালকাজি মালব্যনগর মণ্ডলের সম্পাদক হয়েছেন, বজরং দল ও বিশ্বহিন্দু পরিষদের সম্পাদকের পদও সামলেছেন। ১৯৮৫ সাল নাগাদ রাজ্যে চলে আসেন সংগঠন বিস্তারের জন্য। ২০০১ সালে গাইঘাটা, ২০০৬ ও ২০১১ সালে বাগদা থেকে বিজেপির প্রার্থীও হয়েছিলেন তিনি।
অরবিন্দ বুঝেছিলেন, গাইঘাটার ঠাকুরবাড়িতে বিজেপির সক্রিয়তা বাড়লে তা তাঁর দলের জন্য ভালো। ২০১৭ সালে মতুয়া মহাসঙ্ঘের সম্মেলন আয়োজন করেছিলেন চাঁদপাড়ার মণ্ডল পাড়ায়। সেখানেই এনেছিলেন শান্তনু ঠাকুরকে। ২০১৮ সালে ঠাকুরবাড়ির অশান্তিতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর শান্তনু ঠাকুরকে জেল থেকে ছাড়ানো, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে রাজ্য অফিসে দেখা করানো, ২০১৯ সালে বিজেপির দিল্লি দপ্তরে নিয়ে গিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে দেখা করানোরও নেপথ্য ছিলেন অরবিন্দ।
শান্তনু ঠাকুরের উত্থানে অরবিন্দ বিশ্বাসই ছিলেন ‘মেন্টর’। তাঁর হাত ধরে রাজ্য ও দেশের তাবড় নেতৃত্বের সঙ্গে পরিচয় শান্তনুর। ২০১৯-এ ভোটে শান্তনুর সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন অরবিন্দ। দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সফলও হয়েছিলেন তিনি। সাংসদ হয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুর। তাঁর পিএ হিসেবে কাজ শুরুর চার মাসের মধ্যেই সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন। জানিয়েছিলেন যে তিনি অটলবিহারী বাজপেয়ির হয়ে প্রচার করেছেন। তপন শিকদারের পিএ ছিলেন । দিল্লির বর্ষীয়ান নেতারা তাঁকে ভাইয়ের চোখে দেখেন। মানুষের বিশ্বাস ভেঙে দুর্নীতির সঙ্গে আপস করতে পারবেন না। কার্যত রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিয়ে দিল্লিতে পরিবারের কাছে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি।
সেই অরবিন্দ ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন বনগাঁর রাজনীতিতে। তবে এখন তিনি বলছেন মতুয়া ও নমঃশুদ্র সমাজের বিশ্বাস কীভাবে শান্তনু ঠাকুর ভেঙেছেন, তার কাহিনি। চাইছেন পুরনো ভুলের পুনরাবৃত্তি আটকে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে। চাঁদপাড়ার বাড়িতে থেকে ঘুরছেন মাঠে ময়দানে। প্রচার করছেন মতুয়া সমাজের নিজস্ব প্রার্থী সুমিতা পোদ্দারের হয়ে। জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে মতুয়া, রাজবংশী সহ নমঃশুদ্র সমাজ ও আদিবাসীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন শান্তনু ঠাকুর। এতটুকু উন্নয়ন হয়নি। মানুষকে অবজ্ঞা করেছেন। দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন।
প্রাক্তন ‘মেন্টর; এখন অরবিন্দ প্রচার করছেন যে শান্তনু জিতলে বনগাঁর মানুষ আরও পিছিয়ে পড়বেন।