যতদিন মা-মাটি-মানুষের সরকার আছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের দিকে কেউ চোখে তুলে তাকাবে না – বোলপুরে প্রতিশ্রুতি অভিষেকের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দক্ষিণবঙ্গ পুড়ছে, এই দাবদাহে দলীয় প্রার্থী অসিত মাল এবং শত্রুঘ্ন সিনহার সমর্থনে বোলপুর ও আসানসোলে জোড়া সভা করেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা বক্তব্যেই তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে যান। বলেন, “যতদিন মা-মাটি-মানুষের সরকার আছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের দিকে কেউ চোখে তুলে তাকাবে না। কেউ স্পর্শ করতে পারবেন না।” সম্প্রতি এক বিজেপি (BJP) নেত্রী সভায় বলেছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে তিন মাসের মধ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ হয়ে যাবে। সেই রেকর্ড শুনিয়ে অভিষেকের প্রশ্ন ঘটনার ১৫-১৬ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও কেন বিজেপি ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল না, কেন দলগত অবস্থান জানালো না বিজেপি?
বোলপুরের নানুরের প্রচার সভা থেকে বাম-বিজেপিকে এক সঙ্গে আক্রমণ করেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। অভিষেক বলেন, “২০১১ সালের আগে সিপিএমের চোখ রাঙানি, হার্মাদদের দাপাদাপি উপেক্ষা করে পরিবর্তন করেছিলেন আপনারা। সেই সিপিএমের হার্মাদরাই এখন লাল ঝান্ডা ফেলে গেরুয়া পতাকা নিয়ে বিজেপি হয়েছে। এই নানুরের সুজপুরে ভোট দিতে যাওয়ার পথে হার্মাদদের আক্রমণ প্রাণ হারিয়েছিলেন তৃণমূলের ১১ জন কর্মী-সমর্থক (২৭ জুলাই, ২০০০)। ১৩ মে যখন ভোট দিতে যাবেন, তখন সিপিএমের সেই অত্যাচারের কথা মনে রাখবেন।”
অভিষেকের কথায়, সিপিএম-এর হার্মাদরাই এখন জামা পাল্টা লাল ঝান্ডা ফেলে গেরুয়া পতাকা নিয়ে বিজেপি হয়েছে। বাংলার মানুষ বাম জমানায় যদি পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে এবারও বিজেপিকে বিসর্জন দিতে পারবেন।
১৩ মে বোলপুর ও বীরভূমে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ, ২০১১ সালে ওই দিনেই ক্ষমতায় আসে তৃণমূল সরকার। সেই কথা মনে করিয়ে অভিষেক বলেন, “এবারও বিজেপিকে ওই দিন বিজেপিকে বিদায় দিতে হবে।”
বিজেপি বাংলা বিরোধী বলে অভিষেকের অভিযোগ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বোলপুর সমার্থক। বিজেপি সেই বিশ্বভারতীর ফলক থেকে রবীন্দ্রনাথের নাম মুছে দিয়েছে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে বাড়ি থেকে উৎখাত করার চেষ্টা করেছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি স্বামী বিবেকানন্দকে অজ্ঞ বামপন্থী বলে অপমান করেছেন। উনিশের নির্বাচনের আগে সভা করতে আসা অমিত শাহের দলবল কলকাতায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে। দেশের মধ্যে একমাত্র রাজ্য বাংলা যাদের প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। এই জন্যই বিজেপি বাংলা বিরোধী।
অভিষেকের খোঁচা, মোদী বাংলায় এসে প্রচার করছেন, অথচ অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান নিয়ে একটা শব্দ ব্যয় করেননি। বিজেপি নেতাদের গাড়ি থেকে ভুরি ভুরি টাকার বান্ডিল উদ্ধার নিয়েও আক্রমণ করেন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ, বান্ডিল বান্ডিল টাকা নিয়ে ধরা পড়ছেন বিজেপি নেতারা। ভোট কিনতে টাকা বিলি করছেন। অভিষেক বলেন, টাকা দিলে নিয়ে নেবেন। ওটা আমাদেরই টাকা। আগামী দিনে তৃণমূল প্রার্থী অসিত মাল জিতবেন এবং তার পরে রাজ্যে সরকার ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাড়ি প্রকল্পের প্রথম কিস্তি পৌঁছে দেবে। আবাসের টাকা আটকে রাখা নিয়েও কেন্দ্রকে এক হাত নেন অভিষেক। অভিষেকের ঘোষণা, “খুঁটি পুজো আগে করে গেলাম, ৪ তারিখ বিজেপি বিসর্জন হবে।”