বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

রবি ঠাকুরের রসবোধ সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানেন?

May 8, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শান্তিনিকেতন থেকে উঠে এসেছে কবিগুরুর রসবোধ ও রসিকতার বিভিন্ন কাহিনি। সেই আশ্রম চত্বর জুড়ে পরতে পরতে আজও ছাপ রয়ে গেছে তাঁর জীবনদর্শন, তাঁর সাহিত্যবোধ। তাঁর উপস্থিতিতে বহু গুণী ব্যক্তিত্বই রবীন্দ্রনাথের সময়কালে বিশ্বভারতীকে নানানভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। দেখে নেওয়া যাক সেই সময়ের কিছু মজার কাহিনি দেখে নেওয়া যাক, যা রবীন্দ্ররসবোধকে তুলে ধরে।

বোলপুর স্টেশন থেকে কিছুটা এগোলেই শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস শুরু হয়। ফার্স্টগেটের সামনে দিয়ে রিক্সা যখন ক্যাম্পাসের আপও ভিতরে সঙ্গীতভবন কিম্বা কলাভবনের দিকে এগোতে থাকে, তখন চারিদিকের শীতলতার স্নিগন্ধতা নিয়ে ধীর স্থির প্রকৃতি জানান দিতে থাকে, এ এক অন্য ভুবন! গরমের দিনে অমলতাস ফুলের সারিতে দোলা লাগলেই ইতিউতি লালমাটিয়ে উড়ে এসে পড়ে হলুদ অমলতাস। গোটা প্রকৃতি, পরিবেশজুড়ে কোথাও যেন রবীন্দ্রসত্ত্বাকে খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেন সমস্ত রবীন্দ্রনাথ-প্রেমী মানুষ। যে রবীন্দ্রনাথকে যত চেনা গিয়েছে, ততই যুগের পর যুগ শুধু কৌতূহল বেড়েই গিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো মহীরুহকে ঘিরে, তাঁর জীবনের নানান ঘটনা ঘিরে চিরকালই বাঙালির কৌতূহল থেকে গিয়েছে।

রবীন্দ্রনাথের ভাববোধ কিম্বা রসবোধ শুধুই তাঁর সাহিত্যে ধরা দেয়নি। তাঁর ব্যবহারিক জীবনজুড়ে নানানভাবে লেগে রয়েছে রসিকতার ছোঁয়াও। বিভিন্ন সময় রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত জীবনের নানান করুণ দিক উঠে এসেছে। তবুও বহু মনকষ্ট, চোখের জলের মাঝেও রসিকতার ছোঁয়াকে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেননি, জীবনবোধ উজ্জিবীত এই সাহিত্যিক। দেখে নেওয়া যাক তাঁর প্রিয় শান্তিনিকেতনের বুকে রবীন্দ্রনাথের কিছু মজার ঘটনার কথা। যা বিভিন্ন সময় উঠে এসেছে লোকমুখে, কখনওবা খবরে।

শোনা যায়,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা অভ্যাস ছিল যে তিনি যখনই কোনও কিছু লিখতেন বা উপন্যাস লিখতেন তা শান্তিনিকেতনের গুণীজনের সামনে তুলে ধরতেন। একবার সেই গুণীজনদের আসরে ছিলেন কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। একবার দৃশ্যটি ভাবুন! একদিকে বিশ্বকবি, অন্যদিকে কথাশিল্পী। যাই হোক! বাংলার দুই বন্দিত সাহিত্যিক একযোগে আলোচনা সভায়। এদিকে, সাহিত্য যখন সকলেই মশগুল, তখনই ঘরের বাইরে রাখা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জুতে চুরি হয়ে যায়। এরপরের দিন ঝুঁকি না নিয়ে, আরও একপাটি জুতো জোড়া কাগজে মুড়ে শরৎচন্দ্র নিয়ে আসেন বগলদাবা করে। বিষয়টি বুঝতে পারেন রবীন্দ্রনাথ। শরৎচন্দ্রকে প্রশ্ন করেন, তোমার বগলে ওটা কি ‘পাদুকাপূরাণ’? কবিগুরুর এমন বাক্যবন্ধনীতে সকলেই হেসে ফেলেন।

একবার শান্তিনিকেতনের অধ্যাপক নেপাল রায়কে চিঠি লিখে পাঠান রবীন্দ্রনাথ। জানান নেপালবাবু একটি বড়সড় ভুল করেছেন। যা খুবই বড় অপরাধ। ফলে সত্ত্বর পরের দিন বিকেলে রবীন্দ্রনাথের কাছে এসে নেপালবাবুকে ‘দণ্ড’ নিতে হবে। এমন বার্তা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে পেয়ে অধ্যাপকের ঘুম গেল উড়ে! পরের দিন প্রবল উদ্বেগ নিয়ে কবিগুরুর কাছে যেতেই, রবীন্দ্রনাথ একটি লাঠি নেপালবাবুর দিকে এগিয়ে দিলেন। যে লাঠিটি অধ্যাপক নেপাল রায়েরই ছিল। আর তিনি তা ভুলে ফেলে এসেছিলেন। ফলে ‘ভুল’ এর ‘দণ্ড’ বলতে এখানে রবীন্দ্রনাথ ওই ‘লাঠি’কেই মজার ছলে উল্লেখ করেছিলেন। আর কবীগুরুর এমন রসিকতায় অবাক হয়ে যান শান্তিনিকেতনের এই অধ্যাপক।

শান্তিনিকেতনে ইংরেজি ও ফরাসি পড়াতেন মরিস সাহেব। তিনি একবার প্রমথনাথ বিশীকে বলেন কবিগুরু সদ্য চিনি নিয়ে একটি গান লিখেছেন নাকি, যার মিষ্টতাও প্রবল! পাল্টা প্রমথনাথ বিশী জানতে তান কোন গানের কথা বলা হচ্ছে। এরপর মরিস সাহেব উল্লেখ করেন ‘আমি চিনি গো চিনি তোমারে…. ওগে বিদেশিনী’ গানটির কথা। শুনে প্রমথনাথ বিশী প্রশ্ন করেন, এমন গান চিনি অর্থাৎ সুগার নিয়েই যে লেখা হয়েছে, সেকথা মরিস সাহেবকে কে বলেছেন। মরিস সাহেবের উত্তরে জানা গেল, সেকথা তাঁকে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথই জানিয়েছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kobiguru, #Fun, #Rabindra Nath Tagore, #birth anniversary

আরো দেখুন