মোদীর অনুরোধ সত্ত্বেও বাড়ছেনা ভোটের হার! চতুর্থ দফাতে ২০১৯-এর তুলনায় কম ভোট বাংলায়
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বঙ্গে সোমবার সমাপ্ত হয়েছে লোকসভা নির্বাচনে চতুর্থ দফার আট আসনে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। এদিন বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বর্ধমান পূর্ব, বর্ধমান-দুর্গাপুর, আসানসোল, বোলপুর এবং বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ছে। কমিশন সূত্রে খবর, সোমবার বাংলার ৮ আসনের ভোটদানের হার গড়ে ৮০ শতাংশের বেশি হলেও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় ভোটদানের হার ছিল কিছুটা কম। তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে আট আসনে লোকসভা ভোটের হার ছিল ৮৩.০৫ শতাংশ। আর ২০২৪ সালে সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৮০.২২ শতাংশে। অর্থাৎ উনিশের ভোটদানের হার ২৪-কে টেক্কা দিতে পারল না তা বলা বাহূল্য। রাজনৈতিক মহলের মতে, মোদীর অনুরোধ সত্ত্বেও বঙ্গে বাড়লো না ভোটের হার.
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী চতুর্থ দফায় ২০১৯-এর তুলনায় ২০২৪এ বঙ্গ ভোটের খুঁটিনাটি
১) বর্ধমান পূর্ব: সোমবার সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে। ২০১৯ সালে এই আসনে জিতেছিল ঘাসফুল। এই কেন্দ্রে এবারে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন শর্মিলা সরকার। বিজেপির প্রার্থী অসীমকুমার সরকার। ২০১৯-এ এই লোকসভা কেন্দ্রে ভোটদানের হার ছিল ৮৪.৮৬ শতাংশ। সোমবার এই সংখ্যাটা হয় ৮২.৮৫ শতাংশ।
২) বহরমপুর: ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে এই আসনেই ভোট পড়েছিল ৭৯.৭২ শতাংশ। সোমবার এই সংখ্যাটা হয় ৭৭.৫৪ শতাংশ। এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন বিদায়ী সাংসদ অধীর চৌধুরী। এবারে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য ইউসুফ পাঠান। বিজেপির প্রার্থী ছিলেন নির্মল সাহা।
৩) কৃষ্ণনগর: এই লোকসভা আসনে ২০১৯ সালের নির্বাচনে ছিল ৮৪.১১ শতাংশ। সোমবার এই কেন্দ্রের ভোটদানের হার ৮০.৬৫ শতাংশ। কৃষ্ণনগরের বিদায়ী সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন বিজেপির অমৃতা রায়। এই কেন্দ্রে লড়েছেন কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী এসএম সাদিও।
৪) রানাঘাট: ২০১৯ সালে এই আসনেই ভোটদানের হার ছিল ৮৪.৫৩ শতাংশ। সোমবার রানাঘাট লোকসভা আসনে ভোট পড়েছিল ৮১.৮৭ শতাংশ। এই কেন্দ্রে ২০১৯ সালে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন জগন্নাথ সরকার, এবারে তিনিই প্রার্থী। অন্যদিকে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন মুকুটমণি অধিকারী। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন অলকেশ দাস।
৫) বর্ধমান-দুর্গাপুর: এই কেন্দ্রে ২০১৯ সালে ভোট পড়েছিল ৮২.৭৩ শতাংশ। সোমবার এই কেন্দ্রে ভোটদানের হার ছিল ৮০.৭২ শতাংশ। দিলীপ ঘোষকে এ বার বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেছিল বিজেপি। তৃণমূল ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য কীর্তি আজাদকে প্রার্থী করেছিল।
৬) বোলপুর: এই লোকসভা আসনে ২০১৯ সালে ভোটদানের হার ছিল ৮৫.৮৮ শতাংশ। সোমবার সেখানে ভোট পড়েছিল ৮২.৬৬ শতাংশ। এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ অসিতকুমার মাল। বিজেপির প্রার্থী ছিলেন পিয়া সাহা।
৭) বীরভূম: ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রেই ভোটদানের হার ছিল ৮৫.৪৬। সোমবার এই লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল ৮১.৯১ শতাংশ। এই লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ শতাব্দী রায় অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন দেবাতনু ভট্টাচার্য।
৮) আসানসোল: সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে আসানসোলে। সোমবার চতুর্থ দফার নির্বাচনে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে ভোটদানের হার ৭৩.২৭ শতাংশ। ২০১৯ সালে এই আসনে ভোটদানের হার এর থেকেও ৩ শতাংশ বেশি ছিল। এবারে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও অভিনেতা-রাজনীতিবিদ শত্রুঘ্ন সিংহকেই প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন সুরেন্দ্র অহলুওয়ালিয়া।