BJP রামের নামে ভোট চেয়ে রাবণদের সংসদে পাঠাচ্ছে -হুগলি থেকে তোপ অভিষেকের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শুক্রবার হুগলিতে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে জনসভা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তমলুকে দলীয় প্রার্থী দেবাংশুর সমর্থনে রোড-শোও করেন তিনি। হুগলিতে বিজেপিকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, BJP রামের নামে ভোট চেয়ে রাবণদের সংসদে পাঠাচ্ছে। উঠে আসে বৃজভূষণ, প্রজ্বল রোভান্নাদের প্রসঙ্গ। তৃণমূল নেতা বলেন, “কুস্তিগিরেরা দিল্লিতে বসে অবস্থান করছেন কেন, তাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁদের শ্লীলতাহানি করেছেন সাংসদ। সেই সাংসদের ছেলেকে বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। জেডিএসের প্রজ্বল রোভান্না, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার নাতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মেয়েদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ধর্ষণ করেছেন। তাঁর জন্য মোদী ভোট চাইছেন। রামের নামে ভোট চেয়ে রাবণদের সংসদে পাঠিয়ে জীবন দুর্বিষহ করে তুলছেন।”
উঠে আসে সন্দেশখালির প্রসঙ্গ, অভিষেক বলেন, “সন্দেশখালিতে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল বলছেন প্রতি বুথে মদ খাওয়ানোর খরচ লাগবে পাঁচ হাজার টাকা। বাংলায় ৮০ হাজার বুথ আছে। তা হলে বিজেপির খরচ হবে ৪০ কোটি টাকা। আমি বলছি না, বিজেপির মণ্ডল সভাপতি বলছেন। আবাস, ১০০ দিনের টাকা দিচ্ছে না, মদের টাকা দিচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “মহিলাদের অপমান করেছে বিজেপি। সন্দেশখালি নিয়ে কীভাবে বাংলার সম্মান নষ্ট করেছে! বিজেপি নেতাই বলছেন, সন্দেশখালিতে কোনও ধর্ষণ হয়নি। আমরা মহিলাদের দু’হাজার টাকা দিয়ে ভুয়ো অভিযোগ করিয়েছি তৃণমূলের নেতাদের গ্রেফতার করানোর জন্য। সারা দেশের কাছে বাংলার সম্মান নষ্ট করেছে।”
পরিসংখ্যান দিয়ে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন অভিষেক, বলেন, “কেন্দ্র সরকার হুগলির প্রায় ২,৭১,৩৩৯ জনের ১০০ দিনের টাকা আটকে রেখেছিল। মা মাটির মানুষের সরকার টাকা দিয়েছে। রাজ্য এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ৮২ কোটি ৬২ লাখ টাকা খরচ করে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দিয়েছে। হুগলিতে ১৩ লাখ ৩০ হাজার ৯২৩ জন মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান। লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ভোট দিলে তিনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা বন্ধ করবে। তাঁকে জেতানোর জন্য আবাসের টাকা বন্ধ। রত্মা দে নাগ সাংসদ থাকাকালীন আপনাদের টাকা আটকাতে পেরেছিল? ভোট চাইতে এসে বিজেপি যদি টাকা দিতে আসে, তবে আপনি টাকাটা নিয়ে নেবেন। ওটা আপনার টাকা। পদ্ম ফুলের থেকে টাকা নেবেন, জোড়া ফুলে ভোট দেবেন। মোদী সরকার ১২০০ টাকার গ্যাস দিচ্ছে, আর মমতা ১২০০ টাকা লক্ষ্মীর ভান্ডার দিচ্ছে এটাই তফাত। আপনি জানেন, ২০ হাজার কোটি খরচে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হচ্ছে।”
বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, লকেট চট্টোপাধ্যায় ভোট চাইতে গেলে জিজ্ঞেস করবেন, আপনার দলের নেত্রী বলেছেন লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করে দেবেন, এ নিয়ে আপনার অবস্থান কী? আপনি কি চান লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হয়ে যাক, জিজ্ঞেস করবেন। যে বিজেপি লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করতে চায়, সেই বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দেবেন তো? ভয় পাবেন না। কেউ লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করতে পারবে না। আপনার লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করার ক্ষমতা কোনও নেতার নেই। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি। রাজ্যে যত দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার থাকবে, তত দিন আমরা লক্ষ্মীর ভান্ডার বুক দিয়ে আগলে রাখব। প্রধানমন্ত্রী চাইলেও বন্ধ করতে পারবেন না।”
বিজেপিকে আক্রমণ করে অভিষেকের আহ্বান, “যাঁরা ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে, যাঁরা কালো কৃষি আইন এনে ৭০০ কৃষককে অত্যাচার করেছে, তাঁদেরকে যোগ্য জবাব দিতে হবে ২০ তারিখ। আপনাদের ভোট ঐতিহাসিক ২০ মে। ২০১১ সালের ২০ তারিখ ৩৪ বছরের বাম অপশাসনের অবসান ঘটিয়ে প্রথম বার বাংলার মাটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন। এই ২০ তারিখ যখন আপনারা ভোট দিতে যাবেন, তখন আপনারা শুধু বিজেপির অত্যাচারের কথা মাথায় রেখে ভোট দেবেন। ভোট দিতে যাওয়ার আগে মাথায় রাখবেন জনবিরোধী, বাংলাবিরোধী বিজেপি সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। ৪ জুন ভারতের বুকে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা হতে চলেছে।”