গরিব মানুষের বাড়ির টাকা বন্ধ অথচ BJP-র মদের বাজেট ৪০ কোটি! – জয়নগরে তোপ অভিষেকের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শনিবার জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডলের সমর্থনে জনসভা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন অভিষেক বলেন, ‘‘উন্নয়নের অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটছে। আরও ছুটবে যদি, জোট ইন্ডিয়ার সরকার তৈরি হলে। বিজেপির সরকার আসবে না। এলেও চিন্তা করতে হবে না। ওরা টাকা দিক না দিক, ২১ ডিসেম্বরের আগে যাঁরা আবেদন করবেন, কুলতলির এলাকার সেই মানুষদের বাড়ির টাকা আমাদের সরকার দিয়ে দেবে।’’
এদিন বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘দেশে কালো টাকা বেড়েছে। গরিব আরও গরিব হচ্ছে। ধনী আরও ধনী হচ্ছে। অভিন্ন দেওয়ানিবিধি আনলে সংবিধান পাল্টে যাবে। সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে দেবে। আমরা বলছি না। বিজেপি নিজেই এ কথা বলছে সংকল্পপত্রে।’’
মূল্যবৃদ্ধির জন্য মোদী সরকারকে দায়ি করে অভিষেক বলেন, ‘‘নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। জিরের উপরও জিএসটি চাপিয়েছে। হিরের উপর জিএসটি নেই।” লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রসঙ্গে বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল সেনাপতি বলেন, ‘‘ ‘বিজেপি লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করতে চায়। বিজেপি নেতারা এলে জিজ্ঞাসা করুন।
আমি আছি তো, দেখি কে লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করে। যত দিন তৃণমূল সরকার রয়েছে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীও লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করতে পারবে না।’’
গরিব মানুষের পাশে সবসময় আছে তৃণমূল, কিন্তু বিজেপি গরিবকে ভাতে মারার চেষ্টা করেছে। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর গরিবকে ভাতে মারার চেষ্টা করেছে। সমস্ত প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে।” তাঁর সংযোজন “বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়়ের সময় শুধু তৃণমূল মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। কোভিডের সময়ও তৃণমূল পাশে ছিল। অন্য দিকে বিজেপি সরকার ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়ে গিয়েছে। গত পাঁচ বছরে ৪ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। কিন্তু মানুষের বকেয়া টাকা আটকে রেখেছে।”
এই নির্বাচনে কেন্দ্র সরকার গঠনে মুখ্য ভূমিকায় থাকবে তৃণমূল, প্রত্যয়ী অভিষেক। তিনি বলেন ‘‘৪ জুন সরকার গড়লে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করবে তৃণমূল।” বিজেপি শুধু বৈষম্যের রাজনীতি করে অভিযোগ তুলে তিনি আগ্রাসী মেজাজে বলেন, “বিজেপির ইস্তাহারে শুধু বিভাজন, বৈষম্যের রাজনীতির কথা রয়েছে। কথায় আছে স্যাঁকরার টুকটাক, কামারের এক ঘা। ১ জুন এক কোপে বিজেপিকে বধ করবেন।”
এদিন তাঁর কথায় উঠে এল ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অঙ্গিকারের প্রসঙ্গও উঠে এল তাঁর কথায়। অভিষেক বলেন, “সরকার গড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপিএল পরিবারগুলিকে বছরে বিনামূল্যে ১০টি করে সিলিন্ডার দেবে ‘ইন্ডিয়া’।
এদিন তাঁর বক্তব্যে উঠে এল সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। বিজেপির সন্দেশখালির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল জানিয়েছেন একটি বুথে মদ খাওয়ার খরচ পাঁচ হাজার। এনিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষের সুরে অভিষেক বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ। গরিব মানুষের বাড়ির টাকা বন্ধ। অথচ বিজেপির একটি বুথে মদ খাওয়ার খরচ বলছে পাঁচ হাজার। বাংলায় কত বুথ আছে জানেন? আশি হাজার। একটা বুথে পাঁচ হাজার হলে আশি হাজার বুথে ৪০ কোটি টাকা। বিজেপির বাড়ির টাকা বন্ধ আর বিজেপির ভোটের দিন মদের বাজেট ৪০ কোটি। এত টাকার মদ কে খাবে? অবাক হওয়ার কিছু নেই। এলাকায় কোনও ভাল লোক বিজেপি করে না। আর তাই জন্য মদের বাজেট এত।’’ তিনি সন্দেশখালি স্ট্রিং ভিডিয়ো প্রসঙ্গে আরও বলেন যে, ‘‘সন্দেশখালির ভিডিয়ো দেখেছেন? কী ভাবে মহিলাদের দু’হাজার টাকা দিয়ে ধর্ষণের মতো মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছে। বিজেপির নেতা গঙ্গাধর কয়ালকে এই কথা বলতে শোনা গিয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তমলুকে বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কুরুচিকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে ফের তোপ দেগে তিনি বলেন ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাম কি?’। ভাবুন যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের সহযোগিতা করেছে, তার দাম জিজ্ঞাসা করছেন বিজেপির প্রার্থী। ১ জুন মহিলা শোষণকারী এবং নির্যাতনকারী বিজেপির যে ক’জন ছাঁইপাশ পড়ে রয়েছেন, তাদের ঝেঁটিয়ে বঙ্গোপসাগরে ভাসান দিতে হবে।’’