উপাচার্য নিয়োগের মামলায় ফের সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে বাংলার রাজ্যপাল
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়লেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস। বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথন জানান, অহেতুক রাজনীতি করবেন না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি রাজনৈতিক তোষণের জায়গা নয়। রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে আরও বলা হয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে আটজনকে নিয়োগ করুন। দ্রুত রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর কথাও বলা হয় তাঁকে। আদালত যদি সার্চ কমিটি গড়ে দেয়, তখন কারও কথা শুনবে না আদালত। রাজ্য, রাজ্যপাল, কারও প্রস্তাবিত নাম গ্রাহ্য করা হবে না। আদালত ঠিক করবেন, কে হবেন উপাচার্য।
৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজ্যপাল টানাপোড়েন চলছে দীর্ঘদিন যাবৎ। রাজ্য নাম পাঠাচ্ছে, রাজ্যপাল অর্থাৎ আচার্য তালিকার সঙ্গে সহমত হচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে। রাজ্য-রাজ্যপাল উভয়পক্ষের আইনজীবীর মধ্যে শুরু হয় বিতর্ক। রাজ্যের হয়ে লড়ছিলেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি, রাজ্যপালের হয়ে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি এবং জয়দীপ মজুমদার। ৩১ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র ছ’টিতে নিয়োগ হয়েছে। রাজ্যপালের আইনজীবী জানান,
রাজ্যের পাঠানো তালিকার সাতজনকে যোগ্য বলেই মনে করেননি রাজ্যপাল।
বাকি আটজনের নিয়োগ হয়নি কেন? রাজ্যপালের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, বাকি নাম বিচারের জন্য এখনও দেখাই হয়নি। জবাব শুনেই শুনানির পর্যবেক্ষণে বিচারপতি সূর্য কান্তর মন্তব্য, আপনারা যখন আদালত কক্ষে ঢুকেছেন, তখনই বোঝা গিয়েছে কিছু গোলমাল আছে। ২১ বছর হল বিচারপতির আসনে রয়েছি। আগে থেকেই আন্দাজ করতে পারি। এরপরই বিচারপতি বলেন, অযথা রাজনীতি বাঞ্ছনীয় নয়। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করুন। উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে আপনাদের আচরণ মোটেই কাঙ্ক্ষিত নয়।
রাজ্যের আইনজীবী সিংভি জানান, ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রাজ্য ৬২ জনের নামের তালিকা রাজ্যপালকে পাঠিয়েছিলেন। আচার্যের অফিসের এটাই সমস্যা। রাজ্যের সঙ্গে কথাই বলে না। নিজেরাই ঠিক করছে। আপত্তির কথাও জানায় না। রাজ্যপালের আইনজীবীও পাল্টা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতির বেঞ্চ তাঁকে থামিয়ে নির্দেশ দেয়, যে সাতজনের নাম আচার্যের পছন্দ হয়নি, তার বদলে রাজ্য সরকার আরও কিছু নতুন নাম রাজ্যপালের কাছে জমা দেবে। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য সুপ্রিম কোর্ট সার্চ কমিটি গড়বে। আগামী ১২ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।