রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বিজেপি’র লোভ-হুমকির পাল্টা মমতার উন্নয়নকে সামনে রেখেই ভোট চায় কাঁথি

May 22, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ভোট প্রচারের এই জটিল আবর্তে উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, ডিজেলের অগ্নিমূল্যে মৎস্যজীবীদের হালহকিকত, হু হু করে বেড়ে চলা ভেনাম চিংড়ি চাষের জেরে ক্রমহ্রাসমান ধান জমি, এসব ধর্তব্যের মধ্যেই আনছে না ‘মোদীর পরিবার’। কিন্তু এগুলোই তো সমুদ্র কেন্দ্রিক কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের মূল সমস্যা, বারবার বলছেন তৃণমূলের ‘দাবাং’ প্রার্থী উত্তম বারিক।

উল্টো দিকে, শাম, দান, দণ্ড, ভেদ—কোনওটাই বাদ যাচ্ছে না তথাকথিত ‘গড়’ দখল রাখার চেষ্টায়। হয় ‘প্যাকেট’, নতুবা বাড়িতে আয়কর-সিবিআই হানার ‘১০০ শতাংশ নিশ্চয়তা’—ভোটের মাত্র তিনদিন আগে চণ্ডীপুর থেকে শুরু করে সমুদ্র শহর দীঘা পর্যন্ত কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের সর্বত্র পৌঁছে যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের ‘প্রস্তাব’। আর সঙ্গে পদ্মপার্টির প্রার্থী কনিষ্ঠ পুত্র সৌমেন্দুর হয়ে খাতায়-কলমে বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর আবেগঘন ‘ভোট যাচনা’ তো রয়েছেই। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ট্যাঁ-ফো বন্ধ করিয়ে দেওয়ার হুমকি চলছেই। ভোটপর্বে খাকি উর্দিধারীরা পক্ষপাতদুষ্ট, কথা শোনে না— বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই কাঁথির এসডিপিও এবং পটাশপুরের ওসিকে বদলি করেছে নির্বাচন কমিশন। পুলিস-প্রশাসনের বাকি আধিকারিকদের ‘টার্গেট’ করে এখন গ্রামেগঞ্জে প্রচার চলছে—সতর্ক হোন, কথা শুনুন, নচেৎ বদলি হবেনই।

কাঁথি মহকুমার মূল ‘অর্থনৈতিক কেন্দ্র’ দীঘা! সমুদ্র শহরে ঢোকার মুখে ওল্ড দীঘার বাঁকের বাঁহাতে পরপর স্টল। সল্টেড আর রোস্টেড কাজু বাদাম, ঝিনুকের তৈরি গৃহস্থালির নানা সামগ্রী, ঘর সাজানোর উপকরণ… আরও কত কিছুর পরিকল্পিত স্টল। সেরকমই এক স্টল জুটেছে সুজন গিরির। দাদনপাত্রবাড়ে বাড়ি। রোজ সকালে এসে স্টল খোলেন। সুজনের কথায়, ‘দীঘা তো এখন বাঙালির গোটা সপ্তাহের ডেস্টিনেশন। কী ছিল দীঘায়, আর কী বানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে বা যাঁরা আসছেন, তাঁরাই উপলব্ধি করছেন। পর্যটক বেড়েছে, ব্যবসা বেড়েছে, চাঙ্গা হয়েছে পরিবহণ ব্যবসাও। গত ১০ বছরে বিস্তর হোটেল হয়েছে, বেড়েছে কর্মসংস্থানও। মেরিন ড্রাইভে জগন্নাথ মন্দির তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। ধর্মীয় পর্যটনেও কেল্লাফতে করবে দীঘা।’ সমস্বরে সায় দিলেন মন্দিরা পাত্র, রমা করণ, অসিত দাস মহাপাত্রের মতো ব্যবসায়ীরা। গত ১০ বছরের এই সাফল্য তো দাবি করছে অধিকারী পরিবারও। তাঁদের নেতৃত্বেই তো হয়েছে এসব, কী বলবেন? জবাব দিলেন দীঘা স্টেশনের উল্টোদিকে পিএইচই বাংলো লাগোয়া পান দোকানের এক খদ্দের বিভূতি অধিকারী। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। তাঁর কথায়, ‘রাজার নির্দেশিত পথে নিযুক্ত সেনারা যুদ্ধ করে, তাঁদের পরিশ্রম কদর পায় ঠিকই, তবে গোটা কৃতিত্বটাই রাজার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।’

পরিসংখ্যান কী বলে? সত্যিই কি পর্যটন আর হোটেল দুটোই বেড়েছে দীঘা, মন্দারমণি, তাজপুরের মতো সমুদ্র সৈকতে? কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১০’এর তুলনায় ২০২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দীঘা ও সংলগ্ন সমুদ্রভিত্তিক পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পর্যটক বেড়েছে কোথাও ১২৩, কোথাও ৮০ আবার কোথাও ৭৫ শতাংশ। গত ১০ বছরে শুধুমাত্র দীঘা আর নিউ দীঘাতেই হোটেল হয়েছে ৩০০’র বেশি। এখন দীঘায় মোট হোটেলের সংখ্যা ৭২১। শুধুমাত্র গত দু’বছরে চার এবং তিনতারা সহ নতুন হোটেল হয়েছে ৯৭টি। প্রতিটি হোটেলে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Mamata Banerjee, #Kanthi, #development, #loksabha elections 2024

আরো দেখুন