রেমালের জের, ঝড়ের তান্ডবে শুনশান গোটা কলকাতা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রবিবার বিকেলের পর থেকেই পুরো দমে দাপট দেখাচ্ছে রেমাল, যার জেরে গোটা কলকাতা কার্যত ফাঁকা, শুনশান। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ঝড়ের গতি। রেমালের জেরে প্রাণ হারালেন ৫ নম্বর বিবি বাগান লেনের বাসিন্দা মহম্মদ সাজিদ। জানা গিয়েছে, ১০ নম্বর বিবি বাগান লেনের একটি বিপজ্জনক বাড়ির দেওয়াল ভেঙে আহত হন তিনি। গুরুতর অবস্থায় এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মাথা ফেটে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সাজিদের মৃত্যু হয়। ছেলে বাড়ি না ফেরায় খুঁজতে বেরিয়েছিলেন বাবা। তাতেই মৃত্যু হল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার। মৃতের পরিবারকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
রবিবার সকাল থেকে শহর ছিল ফাঁকা। বাজারে ভিড় ছিল তুলনামূলক কম। যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা কয়েকদিনের বাজার সেরে নিয়েছেন। বেলা গড়াতেই আবহাওয়া পাল্টাতে শুরু করে। বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে ফাঁকা হতে শুরু করে রাজপথ। বিকেলের দিকে শহরের ব্যস্ত মোড়ও শুনশান হয়ে পড়ে। বাস, ট্যাক্সি ছিল না। অ্যাপ ক্যাব গুটিকয়েক, সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বেশি ভাড়া নিয়েছেন অনেকেই। দুর্যোগের কারণে বিকেলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ব্যাহত হয় মেট্রো পরিষেবা। বন্ধ করে দেওয়া হয় মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল।
সাগর, কাকদ্বীপ, বকখালি-সহ রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকার পাশাপাশি কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয় দুপুর থেকে। রাস্তাঘাট কার্যত জনশূন্য হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ গণপরিবহন উধাও হয়ে যায়। একাধিক ট্রেন বাতিল করতে হয়। উল্টোডাঙা, শিয়ালদহ, ধর্মতলায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন বহু মানুষ। লোকসভা ভোটের প্রচারে আজ, কাল ও পরশু শহরে একাধিক নেতানেত্রীর প্রচার কর্মসূচি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কর্মসূচি রয়েছে। রেমালের জেরে কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।
বিকেল ৫টা থেকে ৭টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত টালিগঞ্জ থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা ছিল না।
গত ৬ মে কালবৈশাখীতে কবি নজরুল মেট্রো স্টেশনের ছাউনির একাংশ ভেঙে পড়ে। কিন্তু আজও তা মেরামতি হয়নি। এদিন ছাউনির অন্য একটি অংশ বিপজ্জনকভাবে ঝুলতে দেখা যায়। এসব দুর্ঘটনার আশঙ্কায় মেট্রো পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়।