বারাণসীতে অস্তমিত হয়েছে মোদী ম্যাজিক!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বারাণসীতে দিনের যে কোনও সময় গেলে দেখা যাবে, পাপ্পুর চায়ের দোকান সরগরম। পুজারি অথবা বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির ছাত্র। সরকারি পিওন কিংবা ক্যুরিয়ার কর্মী। বেকার অথবা বোহেমিয়ান। ব্রাহ্মণ কিংবা দলিত। অসি ঘাটে যাওয়ার রাস্তায় পৌঁছনোর ঠিক আগে ডানদিকের আপাত ম্যাড়মেড়ে ওই দেহাতি চায়ের দোকানের আদলের কাঠামোই বারাণসীর মোক্ষম কফি হাউস। এবং ২০২৪ সালে আদৌ মোদীজির ৪০০ পার হবে কি না জানতে ৩৪ রাজ্য ঘোরার দরকার নেই। পাপ্পুর চায়ের দোকানই যথেষ্ট।
সকালে অমিত শাহ, বিকেলে জগৎপ্রকাশ নাড্ডা, সন্ধ্যায় কংগ্রেসের প্রার্থী অজয় রাইয়ের পদযাত্রা, দু’দিন আগে প্রিয়াঙ্কা ও ডিম্পল যাদবের রোড-শোয়ের হাই ভোল্টেজ বারাণসী নির্বাচনের আড়ালে একটাই ইঙ্গিত যেন প্রকট— নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্রে মোদীকে নিয়েই প্রবল উন্মাদনা আর নেই। অস্তমিত হয়েছে মোদী ম্যাজিক। কেন? শিবনাথ মিশ্র বললেন, ‘প্রধান কারণ কিছুটা স্বপ্নের শেষ, আর বাকিটা মোহভঙ্গ। বারাণসীকে নিয়ে এমন একটা হাইপ তোলা হয়েছিল যে, আমরা ভেসে গিয়েছিলাম। সত্যিই তো! প্রধানমন্ত্রী যে কেন্দ্রের এমপি, সেই কেন্দ্র তো স্বর্ণনগরী হবে! জাপানের কিয়োটোর মতো শহর হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মোদীজি। আজ কী হয়েছে? বিশ্বনাথ মন্দির প্রাঙ্গণ নতুন করে হয়েছে। এটা অবশ্যই এক অনেক বড় প্রাপ্তি। কিন্তু ভিড় বেড়েছে, যানজট বেড়েছে। রোজগার কোথায়?’
জঙ্গমবাড়িতে সিটি বুক শপ থেকে বেরিয়ে সুন্দর কুমার বললেন, ‘এয়ারপোর্টের কাছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেল্ট আছে। আমুল কারখানা এসেছে। কিন্তু একজনও স্থানীয় কর্মী নেই। সব গুজরাতি। আমার মামা জমি দিয়েছিল। বলা হয়েছিল, পরিবারের একজন চাকরি পাবে। কেউ পায়নি।’
বারাণসীতে কি মোদী হারছেন? মোটেই নয়। বারাণসীতে কি মোদী টেনশনে আছেন? তাও নয়। বারাণসীতে মোদী জিতছেন। সমস্যা সেটা নয়। প্রধানমন্ত্রীর সমস্যা হল, মন্দির, জ্ঞানবাপী, মঙ্গলসূত্র এসব কথা এখানে কোনও ঢেউ তুলছে না। চর্চাই হচ্ছে না। কবীর চৌরাস্তায় কংগ্রেসের পদযাত্রার ভিড় থেকে দূরে দাঁড়ানো তিন তরুণের ক্ষোভ একটাই, ‘সরকারি চাকরির পরীক্ষাই হয় না। হলেও প্রশ্নপত্র ফাঁস! এই দেখুন, এ হল অনীশ। বি-টেক করে বসে আছে!’