হারিয়ে যাচ্ছে ডুয়ার্সের চিরাচরিত রূপ! দাবি উঠছে নদী মন্ত্রকগঠনের
ডুয়ার্স তার রূপ হারিয়ে ফেলছে ধীরে ধীরে, সেই দিগন্ত বিস্তীর্ণ সবুজ উধাও! নদীতে জল কমছে। গ্রীষ্মের দাবদাহ অনুভূত হয়। প্রচণ্ড তাপে ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। পরিবেশ অনেকটাই রুক্ষ।
ডুয়ার্সের ঘরে ঘরে এখন এসির দাপট, যা সামাল দিতে বিদ্যুৎ দপ্তর রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। ডুয়ার্সে একসময় গোটা বছর ঠান্ডা ঠান্ডা আমেজ থাকত, এখন তা উধাও। দীর্ঘদিন ধরে ডুয়ার্সে অরণ্য নিধন ও গাছ কাটা হচ্ছে, তারই প্রভাব পড়ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ, প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষরাও তা মানছেন। উত্তরের নদীগুলিকে বাঁচাতে নদীমন্ত্রক গঠনের দাবি উঠছে। ডুয়ার্সের অরণ্য, নদী ও গোটা অঞ্চলকে বাঁচাতে কেন্দ্র সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন অনেকেই।
তিস্তা সেতু পেরিয়ে ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, গয়েরকাটা, হাসিমারা, কালচিনি, হ্যামিলন্টগঞ্জ প্রভৃতি জায়গার ঘনসবুজ, নদীগুলির অপরূপ রূপ আজও মানুষের মনে তাজা। আলিপুরদুয়ার, রাজাভাতখাওয়া হয়ে জয়ন্তী, বক্সার বিস্তীর্ণ এলাকার সৌন্দর্যের কথা সবার জানা। কিন্তু এই জায়গাগুলো তাদের রূপ হারাচ্ছে। উত্তরবঙ্গে ৭২টি নদী রয়েছে। যেগুলি পাহাড় থেকে নেমে বাংলাদেশে চলে গিয়েছে। নদীর জল কমে যাওয়ার জন্য নদীর উৎসমুখ থেকে জল কমা, বৃষ্টিপাত কম হওয়া বা অন্য কারণও থাকতে পারে। ডুয়ার্সের নদীগুলিতে বর্ষার সময় দুই-তিন মাস জল থাকছে। বর্ষার পরই বালির চর পড়ছে। নদীর নাব্যতা কমছে, সবুজ কমছে অন্যদিকে তাপমাত্রা বাড়ছে। ভয়ঙ্কর বিষয়। নদীমন্ত্রক গড়ে ওঠা প্রয়োজন, কেন্দ্র সরকারকে ভাবতে হবে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের মতে, পাহাড়ের বৃষ্টির উপর ডুয়ার্সের নদীর জল থাকা, না-থাকা নির্ভর করে। পাহাড়েও আগের তুলনায় বৃষ্টি কমেছে। ফলে জল কমছে। এখন আর আগের মতো বৃষ্টি হয় না। সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব নদীর উৎস অন্য দেশে। ফলে রাজ্য সরকারের কিছু করার নেই। কেন্দ্রকেই করতে হবে। বনাঞ্চল বৃদ্ধির বিষয়টিও কেন্দ্রের উপরে নির্ভর করে। নদী মন্ত্রক রাজ্য সরকার করতে পারে না।