শুধু বিষয়ভিত্তিক নম্বর নয়, এবার সরকারি স্কুলের রিপোর্ট কার্ডে থাকবে পড়ুয়াদের চারিত্রিক গুণাবলি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শুধু বিষয়ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বর নয়, এবার সরকারি স্কুলের রিপোর্ট কার্ডে থাকবে প্রত্যেক পড়ুয়ার চারিত্রিক গুণাবলি। কোনও পড়ুয়া হয়তো পড়াশোনায় ভালো, কিন্তু তেমন বন্ধু নেই। আবার রেজাল্ট খুব একটা ভালো না করলেও হয়তো ক্লাসের মনিটর, নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। আর এই ধরনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যই এবার রেজাল্টে উল্লেখ করা হবে।
এতদিন বেসরকারি বহু স্কুলেই এই ধরনের রিপোর্ট কার্ড চালু ছিল। এবার সরকারি ক্ষেত্রেও চালু হচ্ছে ‘হোলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড’। শিক্ষক মহলের একটা বড় অংশই উদ্যোগটিকে স্বাগত জানাচ্ছেন। রাজ্যের শিক্ষা কমিশন, উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশে মধ্যশিক্ষা পর্ষদও গতবছর পড়ুয়াদের একটি প্রোফাইল তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল। তবে, গুটিকয়েক স্কুলই তা করে উঠতে পেরেছিল। তার মধ্যে অন্যতম হল যাদবপুর বিদ্যাপীঠ। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘আমরা স্কুলস্তরে প্রোফাইল তৈরির সময় যেসব বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছিলাম, নতুন রিপোর্ট কার্ড প্রায় তার কাছাকাছি। এটা দেখে ভালো লাগছে। ওড়িশা থেকে আসা শিক্ষামন্ত্রকের প্রতিনিধি দলও এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছিল।’ তবে, যে সমস্ত স্কুলে শিক্ষকের অভাব, কম সময়ে সিলেবাস শেষ করার চাপ, সেখানে এই সার্বিক রিপোর্ট কার্ড সঠিকভাবে তৈরি করা কতটা সম্ভব? পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, আমাদের স্কুলে এটা কার্যকর হবে, সেটা বলতে পারি। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও খুব আগ্রহী। অনেক সময় দেখা যায়, ক্লাস টিচার সমস্ত ছাত্রছাত্রীর নাম জানেন না। তারা কোথায় থাকে, তাও জানেন না। এই কাজ করতে গেলে সেগুলি তাঁরা জানবেন। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে এই পার্সোনাল টাচ খুব জরুরি।’
এই রিপোর্ট কার্ড সার্বিকভাবেই বেশ বিজ্ঞানসম্মত বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। কোনও পড়ুয়ার আগ্রহের ক্ষেত্র, ব্যতিক্রমী দক্ষতা, মনোভাব, উদ্বেগের জায়গা, কোনও বিশেষ বিষয় শেখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা, আত্মসচেতনতা, যোগাযোগের দক্ষতা, সার্বিকভাবে গঠনমূলক, বিশ্লেষণাত্মক এবং গভীরভাবে ভাবনাচিন্তার ক্ষমতাও মূল্যায়ন করে তা লিখতে হবে রিপোর্ট কার্ডে। এসব দেখে ছাত্রছাত্রীরা স্বমূল্যায়নও করতে পারবে বলে আশাবাদী শিক্ষক মহল।