৫০৮ বছরে পড়ল চৈতন্যের স্মৃতিবিজড়িত পানিহাটির দণ্ড মহোৎসব
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: দণ্ড মহোৎসব উপলক্ষ্যে মেতে উঠল চৈতন্যদেব ও নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর লীলাভূমি পানিহাটি, বৃহস্পতিবার গঙ্গায় পুণ্যস্নানের পর মহোৎসবতলা ঘাটে চিঁড়ে, দই, গুড়, কলা, কাঁঠাল-সহ ভক্তরা দণ্ড মহোৎসবে মেতে ওঠেন। খোল, করতাল, আর হরিনামের মুখরিত হয়ে ওঠে গঙ্গার পাড়। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ভক্তদের ঢল নেমেছিল। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা, বাংলাদেশ-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ভক্তেরা চিঁড়ের মেলা তথা দণ্ড মহোৎসবে যোগ দিয়েছেন। প্রায় ৫০৮ বছরের ইতিহাস আঁকড়ে রয়েছে এই উৎসব।
রাঘব পণ্ডিতের বাড়িতে চৈতন্য মহাপ্রভু ও নিত্যানন্দ মহাপ্রভু আসতেন। হুগলির সপ্তগ্রামের জমিদারের পুত্র রঘুনাথ দাস দীক্ষা নেওয়ার জন্য চৈতন্য মহাপ্রভুর কাছে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁকে পানিহাটিতে অবস্থানরত নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর কাছে পাঠান। তখন মহোৎসবতলা ঘাটে ভক্তদের সঙ্গে বসেছিলেন নিত্যানন্দ। রঘুনাথকে নিত্যানন্দ দই, চিঁড়ে খাওয়ানোর দণ্ড দেন। ভক্তদের দই, চিঁড়ে, গুড় সহ মরশুমি ফল খাওয়ান রঘুনাথ। সেই থেকে প্রতি বছর আয়োজিত হচ্ছে দণ্ড মহোৎসব।
ভোররাত থেকে মহোৎসবতলা ঘাটে ভিড় উপচে পড়ে। ভোর ৪টে নাগাদ আরতির পর ভক্তদের পুজো দেওয়ার জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হয়। দুপুরে মেলায় আসেন সাংসদ সৌগত রায়। সকাল থেকে পানিহাটির বিধায়ক-সহ পুরসভার সিআইসি ও কাউন্সিলাররা উপস্থিত ছিলেন। সকাল থেকে মেঘলা আকাশ এবং ভ্যপসা গরমের জেরে ভক্তদের কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া আটকাতে দফায় দফায় জল স্প্রে করা হয় ভক্তদের উপর। দুপুর ১টা নাগাদ বৃষ্টি হয়, স্বস্তি মেলে।
এদিন পুলিশি নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। গঙ্গার ঘাটগুলিতে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি ঘাটে নৌকা ও স্পিড বোট মোতায়েন রাখার পাশাপাশি গঙ্গায় দিনভর পুলিশের লঞ্চ টহল দিয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছিল বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের। বিভিন্ন মঠ ও আশ্রমে ভক্তদের বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। মন্দিরের আশপাশে মেলা বসতে দেওয়া হয়নি।