গোপনীয়তা রক্ষার দায় আর থাকবে না ডাক বিভাগের, নতুন আইন নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এদেশে এতদিন পোস্ট অফিসের যে কাজকর্ম চলে এসেছে, তা ১৮৯৮ সালের আইন অনুযায়ী। ১২৫ বছর পর সেই আইনের পরিবর্তন করল কেন্দ্র। এর ফলে ডাকযোগে কোনও ব্যক্তি কিছু পাঠালে, তার গোপনীয়তা রক্ষার দায় আর থাকবে না ডাক বিভাগের।
নয়া আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে এখন থেকে সাধারণ মানুষের পাঠানো চিঠি খুলে পড়তে পারবেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। সেই সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পার্সেল বা কোনও ডাক-পণ্য খুলে পরীক্ষা করতে পারবে এবং চিঠি বা পণ্য প্রয়োজনে নষ্ট করে দিতে পারবে। আইনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার কোনও অফিসারকে কোনও ডাক-পণ্যকে আলাদা করা, তা খোলা এবং আটক করার জন্য ক্ষমতা দিতে পারে। এর উদ্দেশ্য রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষা, আপৎকালীন পরিস্থিতি, বাইরের কোনও বন্ধু দেশের স্বার্থরক্ষা, সাধারণ মানুষের সুরক্ষা ইত্যাদি। আইন লঙ্ঘন করার মতো কোনও কিছুর আঁচ পেলেই পণ্য বা চিঠি আটক করা ও তা খোলা যাবে। এতদিন পর্যন্ত এমন কোনও স্বাধীনতা ডাক বিভাগের ছিল না।
সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, আইনে ইমার্জেন্সি বা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পণ্য খোলার যে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, তা মারাত্মক। কারণ, এক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট কারণকে সামনে আনার দায় থাকবে না ডাক বিভাগের। আইনে বলা হয়েছে, যদি কেন্দ্রীয় সরকার মনে করে পণ্য বা চিঠিটি নষ্ট করে ফেলা দরকার, তারা সেটা করতে পারবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও প্রেরকের কোনও অনুমতির প্রয়োজন হবে না বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এর পাশাপাশি ডাক বিভাগের আধিকারিকদের অধিকার দেওয়া হয়েছে, কোনও পণ্যকে সন্দেহজনক মনে হলেই তা শুল্ক দপ্তরের হাতে তুলে দিতে পারবে। রাজস্ব এড়িয়ে যাওয়ার জন্য পণ্যটি ডাকযোগে পাঠানো হচ্ছে, এমন সন্দেহ হলে বা কোনও নিষিদ্ধ পণ্য পাঠানোর চেষ্টা হলে সেটি শুল্ক দপ্তরে পাঠানোর অধিকার আছে আধিকারিকদের। আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনও পণ্য পাঠাতে দেরি হয় বা ভুল জায়গায় চলে যায় বা সেটি খুঁজে না পাওয়া যায়, তাহলে তার দায় পোস্ট অফিসের কোনও কর্মী বা আধিকারিকের নেই। কেন্দ্রের এই আইনে তাজ্জব সাধারণ মানুষ। যে ডাকবিভাগের উপর ভরসা করে তাঁরা পণ্য বা চিঠি পাঠাবেন, কোনও ক্ষতি হলে, তাদের বিরুদ্ধে কোনও আঙুল তুলতে পারবেন না তাঁরা।