বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি হচ্ছেন দেবশ্রী চৌধুরী?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিজেপির পরবর্তী বঙ্গ সভাপতি হচ্ছেন দেবশ্রী চৌধুরী? বঙ্গ বিজেপি’র অন্দরে এখন তা নিয়েই চলছে জল্পনা। দেবশ্রী বালুরঘাটের মেয়ে। পড়াশোনাও সেখানে। খাদিমপুর গার্লস স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক। তার পরে বালুরঘাট কলেজ। ছোট থেকেই সংযোগ সঙ্ঘের সঙ্গে। কলেজ জীবনেই এবিভিপি-তে নজর কাড়েন সাংগঠনিক স্তরে। ফলে যুব মোর্চায় তাঁর উত্তরণও ঘটে দ্রুতই। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে দেবশ্রীকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। রাজনীতিতে তখন আনকোরা বাবুল সুপ্রিয় পাশের আসন আসানসোল থেকে জিতলেও দেবশ্রী বর্ধমান-দুর্গাপুরে সে ভাবে দাগ কাটতে পারেননি।
তবে ২০১৯ সালের রায়গঞ্জ আসন থেকে জিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন দেবশ্রী। বিরোধীরা বলেন, মহম্মদ সেলিম এবং দীপা দাশমুন্সির দ্বৈরথ ওই আসনে দেবশ্রীকে বৈতরণী পার করিয়ে দিয়েছিল। ফলে দেবশ্রী যে মন্ত্রী হতে পারেন, তা-ও কেউ আশা করেননি। রাজ্য বিজেপি-র নেতাদের অনেকেই অবাক হয়েছিলেন রায়গঞ্জের সাংসদের নাম কেন্দ্র্রীয় মন্ত্রী হিসেবে ঘোষণার পরে।
২০২৪-এ দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ আসনে তাঁর প্রার্থিপদ নিয়ে বিস্তর টানাপড়েন চলেছে দলের অন্দরে। বিজেপি সূত্রে খবর, দেবশ্রীই আর রায়গঞ্জ থেকে ভোটে দাঁড়াতে চাইছিলেন না। তিনি চেয়েছিলেন দমদম আসন থেকে লড়তে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি দক্ষিণ কলকাতায় প্রার্থী করে পদ্মশিবির। কোনও অঘটনও ঘটেনি। মালা রায়ের কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট থেকে সাংসদ হয়ে কেন্দ্রে মন্ত্রী হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ফলে বিজেপির এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি মেনে তাঁকে যেকোনও একটি দায়িত্ব সামলাতে হবে। কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলালে স্বাভাবিকভাবেই দলের রাজ্য সভাপতির ব্যাটন অন্য কারও হাতে তুলে দিতে হবে সুকান্তবাবুকে। কিন্তু কে হবেন বিজেপির পরবর্তী বঙ্গ সভাপতি? আপাতত এ প্রশ্নকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই চর্চা শুরু হয়েছে। এবার জানা যাচ্ছে যে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মহিলা সভাপতির দিকেই পাল্লা ভারী বঙ্গ বিজেপির। মূলত ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই এহেন সিদ্ধান্ত নিতে পারে গেরুয়া শিবির। কারণ সেক্ষেত্রে বাংলায় বিজেপির পক্ষ থেকেও কোনও মহিলা মুখকে তুলে ধরা সম্ভব হবে। চর্চায় রয়েছেন বিজেপির দুই প্রথম সারির মহিলা মুখ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী ও প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তবে সবদিক বিচার করলে বলা যায়, প্রাক্তন মন্ত্রীই অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন।
বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই দিল্লিতে এই নাম চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে। যদিও তার ঘোষণা এখনই করা হবে না। প্রত্যেক রাজ্যে বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই দলের পক্ষ থেকে সেই নাম জানানো হবে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে দিল্লিতে রাজ্য বিজেপির সাংসদদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করতে পারেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর একই নিয়মে নাড্ডাকেও দলের সর্বভারতীয় সভাপতির পদ ছেড়ে দিতে হবে। জানা যাচ্ছে, বঙ্গ বিজেপির সঙ্গে শাহ-নাড্ডার সম্ভাব্য বৈঠকে ডাকা হতে পারে এবারের পরাজিত সাংসদ এবং প্রার্থীদের। বাংলায় দলের পরবর্তী রাজ্য সভাপতি বাছাইয়ের জন্য সর্বাগ্রে সাংসদদের সঙ্গেই আলোচনা করে নিতে পারেন বিজেপির শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতারা।