আজ থেকে কার্যকর নয়া ফৌজদারি আইন, প্রতিবাদে সরব বিরোধীরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ থেকে আমূল বদলে গেল দেশের ফৌজদারি আইন। থাকল না ৪২০, ৪৯৮এ-র মতোন ধারা। বিরোধীদের আপত্তি উড়িয়ে ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়ে গেল দেশে ৩টি নতুন ফৌজদারি আইন। ভারতের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় লক্ষণীয়ভাবে বদল আসতে চলেছে। এবার সরকারিভাবেই বাতিল হল দেড়শো বছরেরও বেশি প্রাচীন ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, ১৮৬০।
সোমবার দেশজুড়ে চালু হচ্ছে নতুন তিনটি ফৌজদারি আইন—ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম। ফলে একেবারে গোড়া প্রস্তুতি নিতে হবে পুলিস-প্রশাসন, আইনজীবী, বিচারক-বিচারপতিদেরকেও। যদিও ২দিন আগে এই আইনের উপর স্থগিতাদেশ জারির আর্জি জানিয়ে শীর্ষে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে।
নতুন আইনে অনলাইনে অভিযোগ দায়ের, SMS-এর মাধ্যমে সমন কিংবা যে কোনও থানায় ‘Zero FIR’ করা মতো নিয়ম চালু হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যের পুলিস, জেল, ফরেন্সিক বিভাগ এবং বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ৫ লাখ ৮৪ হাজার ১৭৪ জনকে নতুন আইনের ব্যাপারে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে চালু হয়েছে নতুন অ্যাপ।
তিন ফৌজদারি আইন নিয়ে বিরোধী রাজ্যগুলিতে কড়া প্রতিবাদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে মোদী সরকারকে। এ রাজ্যের সমস্ত আদালতে ‘কালা দিবস’ পালনের কর্মসূচির নিয়ে বার কাউন্সিল অব ওয়েস্ট বেঙ্গল। তাদের মতে, কেন্দ্রের এই ৩ নতুন আইন অগণতান্ত্রিক এবং নাগরিক-বিরোধী। এই ৩ আইনে পুলিসকে ইচ্ছেমতো গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর আগে এই ৩ আইনের প্রতিবাদ করে মোদীকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ রাজ্যসভায় এই আইনের প্রতিবাদে সোচ্চার হবেন তৃণমূলের সাংসদ ও রাজ্যসভায় দলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনিও ফৌজদারি আইনকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে দাবি করেছেন। বিরোধীদের আপত্তি মূলত দেশদ্রোহিতা সংক্রান্ত বিধি নিয়ে। গত ১০ বছরে মোদী সরকারের সমালোচনা কিংবা বিরোধিতা করলে সেই নাগরিকের বিরুদ্ধে দমনমূলক পদক্ষেপ করা হতে পারে। প্রসঙ্গত, আইপিসি-র ১২৪(ক) ধারাটিতে ‘দেশদ্রোহিতা’ অপরাধটি এ বারের ন্যায় সংহিতায় ১৫২ ধারাতে রয়েছে। তবে ওই শব্দটি বাদ দিয়ে প্রায় একই ভাষায় দেশের ‘সার্বভৌমত্ব ও ঐক্য’র সব ধরনের বিরোধিতার ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তিদানের কথা উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়াও এতোদিন চলা পুরনো আইনে মামলাগুলির ভবিষ্যৎ কী হবে? সে নিয়েও থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন