‘যৌন কেলেঙ্কারি’র তথ্য গোপন করতে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে অপসারণের আর্জি জানালেন রাজ্যপাল
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে তদন্ত করার অভিযোগে কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং সংশ্লিষ্ট ডিসি-কে অপসারণের আর্জি জানিয়ে নবান্ন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে এ বিষয়ে জানা গিয়েছে।
কলকাতার বর্তমান সিপির দায়িত্বে রয়েছেন বিনীত গোয়েল ও ডিসি সেন্ট্রাল হলেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। ডিসি সেন্ট্রালের অধীনেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার মামলা চলছিল। এই দুই শীর্ষস্থানীয় পুলিশকর্তাকে অপসারন করে নিজেকে ‘সুরক্ষিত’ রাখার চেষ্টা করছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিকমহল।
গত ২ মে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী এক মহিলা যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগে তদন্ত করা যায় না বলে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি কলকাতা পুলিশ। তবে অভিযোগ না-লিখলেও মহিলার বয়ানের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে ছিল কলকাতা পুলিশ। ডিসি (সেন্ট্রাল) বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হন বলেও লালবাজার সুূত্রে জানা যায়। পুলিশ উদ্যোগী হয়ে রাজভবনের সিসি ক্যামেরার কিছু ফুটেজ সংগ্রহ করে মহিলার সঙ্গে কিছু হয়েছে কি না বোঝার চেষ্টা করে। মহিলাকে পুলিশের কাছে যেতে বাধা দেওয়ায় রাজভবনের কয়েক জনের আধিকারিকের নামে মামলাও রুজু করেছিল পুলিশ। কিন্তু হাই কোর্টের স্থগিতাদেশে সেই তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়। তবু এই অভিযোগ পর্ব থেকেই রাজ্যপাল, পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত।
বিগত কয়েকদিন ধরেই দুই তৃণমূল বিধায়কের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজভবনের মধ্যে জটিলতা বেড়েছে। অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে উত্তপ্ত হয় হাওয়া। নারী নিরাপত্তার ইস্যু তুলে রাজভবনে গিয়ে শপথ নিতে অস্বীকার করেন নব নির্বাচিত বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই রাজ্যপালের ‘কীর্তি’ নিয়ে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। আর তারপরেই দিল্লি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা রুজু করেন রাজ্যপাল বোস। আর তারপরেই রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে পৌঁছয়। সম্প্রতি রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক ‘উত্তপ্ত’ হওয়ায় হেনস্থার ইস্যুটি ফের সামনে চলে এসেছে।