গণপিটুনির মতো হিংসাকে রোখার নতুন আইন আটকে রেখেছে রাজভবন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০১৯ সালে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বিল এনেছিলেন। ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল (প্রিভেনশন অব লিঞ্চিং) বিল, ২০১৯’ পাশ হয়ে গিয়েছিল সেই বছরের অগস্ট মাসেই। সেই বিলে গণপিটুনিতে মৃত্যু হলে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু পাঁচ বছর কেটে গেলেও সে বিল আইনে পরিণত হয়নি। আটকে রয়েছে লালফিতের ফাঁসে। আইন বানাতে রাজভবনের প্রয়োজনীয় সই মেলেনি এখনও।
২০১৯ সালে রাজ্যপাল ছিলেন জগদীপ ধনকার। ঢিলেমি দেখিয়েছিলেন তিনি। আর তাঁর পর সি ভি বোস। রাজভবনের গণ্ডি পেরল না সই করা ফাইল। অথচ, রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই আইন কার্যকর হওয়ার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি বোধ হচ্ছে। প্রতিদিন গুজব, শিশুচুরির ভুয়ো খবর, গণপিটুনি, চোর সন্দেহে পিটিয়ে মার এবং মৃত্যু। উত্তেজনা, আতঙ্ক বাড়ছে প্রতিদিন। ২৮ জুন বউবাজার, ২৯ জুন সল্টলেক, ৩০ জুন পাণ্ডুয়া, ৩০ জুন ঝাড়গ্রাম, ১ জুলাই তারকেশ্বরে গণপ্রহারে মৃত্যু হয়েছে। এমন ঘটনা প্রতিরোধেই কড়া শাস্তির উল্লেখ রেখে ২০১৯ সালের ৩০ আগস্ট বিধানসভায় বিল পাশ করিয়েছিল রাজ্য সরকার। সমর্থন জানিয়েছিল তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেস এবং সিপিএমও। ধ্বনি ভোটে বিল পাশের পর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আইন হাতে তোলার অধিকার কারও নেই। কোনও অভিযোগ থাকলে পুলিসকে জানান। তারা আইনি ব্যবস্থা নেবে। গণপিটুনি সামাজিক অপরাধ। একে রুখতে হবে।’
‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রিভেনশন অব লিঞ্চিং বিল’-এ বলা হয়েছে, গণপ্রহারে কারও মৃত্যু হলে বা খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে কাউকে মারা হলে, দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। সঙ্গে এক থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা। গণপ্রহারে কেউ আহত হলে দোষীদের তিন বছর পর্যন্ত জেল অথবা ৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা, অথবা দুটোই হতে পারে। গণপ্রহারে কারও আঘাত গুরুতর হলে দোষীদের ১০ বছর কারাদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধি রয়েছে। অথচ এই উদ্যোগ কার্যকর করা যাচ্ছে না রাজভবনের টালবাহানায়। সেই সুযোগে বিজেপি লাগাতার অভিযোগ তুলছে রাজ্যের বিরুদ্ধে।