যোগী রাজ্যের পুলিশের হাতে বাগদা থেকে গ্রেপ্তার বাংলার BJP নেতা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জালিয়াতি, মানবপাচার-সহ একাধিক অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার বিজেপির যুব নেতা। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার গাঙ্গুলীয়া এলাকা থেকে বিজেপির ওই যুব নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরপ্রদেশের লখনউ অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াড। অর্থাৎ যোগীর রাজ্যের পুলিশ বাংলায় এসে বিজেপির যুব নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। এই খবর চাউর হতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। অভিযুক্তের নাম বিক্রম রায়। তাঁর বিরুদ্ধে আইপিসি ৪১৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৭১, ৩৭০, ১২০বি ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মানব পাচার যোগ থাকার অভিযোগে ওই বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়েছে উত্তরপ্রদেশ এটিএস।
আগামী ১০ জুলাই বাগদা বিধানসভায় উপ নির্বাচন। তার আগে সেখানকার বিজেপি নেতা গ্রেপ্তার হওয়ায় রাজনৈতিকভাবে কিছুটা গাড্ডায় পড়েছে বিজেপি। আর এটাকেই রাজনীতির প্রচারে অন্যতম হাতিয়ার করে এগচ্ছে তৃণমূল। বনগাঁ তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের বক্তব্য, ‘বিজেপির যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতার করেছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ। রোহিঙ্গাদের আই কার্ড, আধার কার্ড ওরা করে দিচ্ছে। এভাবে কত জঙ্গি ভারতে ঢুকিয়েছে তার কোনও হিসেব নেই। এই দেশদ্রোহী কাজের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। বিজেপির লজ্জা হওয়া উচিত এমন লোকেদের তারা দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়।’
উত্তরপ্রদেশের একটি মামলায় বাগদার বিক্রমের যোগের প্রমাণ পায় সে রাজ্যের পুলিস। এরপর সোমবার বাগদা এসে পৌঁছয় ছয়জনের একটি দল। বাগদা থানার পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে তারা গাঙ্গুলিয়া যায়। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। জানা গিয়েছে, গাঙ্গুলিয়ার বাসিন্দা বিক্রম পেশায় টোটো চালক। রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় যোগ রয়েছে তাঁর। গত লোকসভা নির্বাচনে দলের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। উপ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। গ্রেপ্তার হতেই এলাকায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
বাগদার সীমান্তবর্তী গ্রাম গাঙ্গুলিয়ার পাশেই রয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। চোরাপথে প্রতিদিন বহু বাংলাদেশি এদেশে আসে এই সীমান্ত দিয়ে। জানা গিয়েছে, চোরাপথে আসা বাংলাদেশিদের অনেকেই ধৃত বিজেপি নেতার টোটোয় করে অন্যত্র যেত। অনুপ্রবেশকারীদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিতেন তিনি। সেই সূত্রে অনেক অনুপ্রবেশকারীর সঙ্গে বিক্রমের যোগাযোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের এদেশে আসতে সাহায্য করত এদেশের দালালরা। তাদের সঙ্গেও ধৃত বিজেপি নেতার যোগাযোগ ছিল।
বিক্রমের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বনগাঁ জেলা বিজেপি সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘ও টোটো চালায়। উত্তরপ্রদেশের পুলিশের বক্তব্য বিক্রম টোটোতে করে যে যাত্রী এনেছিল সে বাংলাদেশি। এক থেকে দু’বার হয়ত ওই টোটোতে গিয়েছে। তার সঙ্গে ওর পরিচয় আছে। মোবাইলে কথাও হয়। সেই সূত্র ধরেই ওরা এসেছিল। লখনউ পুলিশ বলল, ওকে নিয়ে যাচ্ছি জেরা করব। গরিব ঘর থেকে উঠে এসেছে। তবে যদি কোনও অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে পদক্ষেপ করা হবে।’