মোদীর তুঘলকি কান্ড! রাহুল, মহুয়া, কল্যাণদের ভাষণ থেকে শব্দ ছাঁটাল লোকসভার সচিবালয়
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাহুল, মহুয়াদের জ্বালাময়ী ভাষণের সময় সংসদে বসে থাকতে পারেননি মোদী, কিছুক্ষণ পর অধ্যক্ষও চেয়ার ছেড়ে সরে পড়েন। এবার বিরোধী সাংসদদের ভাষণ থেকে শব্দ বাদ দিল লোকসভার সচিবালয়। রাহুল গান্ধীর বক্তব্য থেকে নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি, আরএসএস, অগ্নিবীরের মতো প্রায় ২৪৬টি শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে ‘আপত্তিকর’ যুক্তিতে। লোকসভার সচিবালয় তরফে সোমবার রাত দুটোর সময় এ কথা জানানো হয় সংবাদমাধ্যমকে। তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও বক্তব্যের কিছু অংশ বাদ পড়েছে। জোড়াফুলের আর এক সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলের ভাষণকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। মহিলা কুস্তিগিরদের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগে অভিযুক্ত বিজেপির এক প্রাক্তন সাংসদের নাম নিয়েছিলেন তিনি। তাও বাদ দেওয়া হয়েছে। উদ্ধবপন্থী শিবসেনার সাংসদ অরবিন্দ সওয়ান্তের বক্তব্যের অংশ লোকসভার রেকর্ডে থাকছে না। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের একের পর এক সাংসদের ভাষণে কোপ পড়ায়, বিরোধীদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ উঠল।
বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। প্রশ্ন উঠছে, রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের উপর ধন্যবাদজ্ঞাপনের আলোচনায় বিজেপির অনুরাগ সিং ঠাকুরের বক্তব্য ছিল অভিযোগে ভরপুর। তা সত্ত্বেও তাঁর বক্তব্য থেকে মাত্র একটি শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ রাহুলের বক্তব্যের সিংহভাগ অংশে কোপ! কোন যুক্তিতে?মঙ্গলবার সংসদে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন রাহুল। প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে তিনি বলেন, মোদীজি রাজত্বে সত্যের উপর কোপ পড়তে পারে। কিন্তু বাস্তবে সত্যকে বাদ দেওয়া যায় না।
মহুয়াও সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, এভাবে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করে কি সত্যর গলা টেপা যায়? মোদী যত বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করবেন, তত বিজেপির আসন কমবে। রাজ্যে রাজ্যে হারবে। রাহুল গান্ধীর বক্তৃতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার। রাহুলের বক্তব্যের অংশ বাদ দেওয়া নিয়ে সৌগত রায়ের প্রশ্ন, অভয় মুদ্রা, মোদীজি, তীর, লজ্জার মতো শব্দও কি করে অংসদীয় হয়ে গেল এখন?
এদিন লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী জবাবি ভাষণের সময় ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ চলে। মণিপুর ইস্যুকে অস্ত্র করে বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। আওয়াজ উঠে যায়, ন্যায় দো, ন্যায় দো, মণিপুর মণিপুর। মোদীর ভাষণকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল বিরোধীদের স্লোগান। উত্তর-পূর্বের রাজ্যে দু’টি আসনেই জিতেছে কংগ্রেস। তার মধ্যে একজন সাংসদকে রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের আলোচনায় বলতে না দেওয়ায় প্রতিবাদে সোচ্চার হন রাহুল। স্পিকারকে অনুরোধ করেন, মণিপুরের সাংসদকে বলতে দেওয়া হোক। ততক্ষণে ভাষণ শুরু করে দিয়েছেন মোদী। তাই মণিপুরের সাংসদ-সহ পুরো কংগ্রেস নেমে আসে ওয়েলে। তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টির সাংসদেরাও প্রতিবাদে শামিল হন।