এখানে রথে থাকে না জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার কোনও মূর্তি, থাকে কষ্টিপাথরের নারায়ণ শীলা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কাশীপুরে প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন দে পরিবারে রয়েছে প্রসিদ্ধ গোপীনাথ জিউর (রাধা গোবিন্দ) মন্দির। কিন্তু সেই মন্দিরের রথে থাকে না জগন্নাথ, বলরাম বা সুভদ্রার কোনও মূর্তি। সেখানে রথে বসে মাসির বাড়ি যায় দে পরিবারের কূলদেবতা, নানা অলঙ্কারে শোভিত কষ্টিপাথরের নারায়ণ শীলা। নগর সংকীর্তনের মাধ্যমে রথে চেপে উত্তর কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত ঘোরেন নারায়ণ।
দে পরিবারের তরফে তুষার দে ও তাঁর স্ত্রী গোধূলি দে জানান, তাঁদের বাড়ির মন্দিরে নিত্যপূজিত স্বয়ং নারায়ণ স্বপ্নাদেশ দিয়ে এই বাটির রথে চাপার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন বলে তাঁদের পূর্বপুরুষদের কাছে শুনেছেন। সেই পুরাতন রীতিনীতি আজও মেনে চলা হয়। সেই কারণেই এই বাড়ির মন্দিরে রথে থাকে না জগন্নাথদেবের মূর্তি। সেখানে রীতিমতো রাজবেশে নারায়ণ শীলাকে ফুলমালায় সাজিয়ে রথে ঘোরানো হয়ে থাকে। তুষারবাবুর কন্যা সৃজিতা দে (চট্টোপাধ্যায়) বলেন, এই বাড়ির মেয়ে হিসেবে ছোটবেলা থেকেই বাড়ির রথযাত্রা নিয়ে আমাদের বাড়তি একটা আবেগ আছে। রথের দিন গোপীনাথের মন্দির ফুল মালা, লতাপাতায় সাজানো হয়। মন্দিরের সিংহাসনে থাকা কূলদেবতা নারায়ণ শীলাকে স্নান করানোর পর তাঁকে সুগন্ধী ফুল সহ সাজানো হয়। তারপর নিষ্ঠা সহকারে পুজো অর্চনা ও আরতি করা হয়ে থাকে।
মন্দিরের তরফে জানানো হয়েছে, রথযাত্রার দিন মন্দিরে নারায়ণকে কোনও অন্নভোগ দেওয়া হয় না। তার পরিবর্তে নানারকম ফল, মিষ্টি ও নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়। বিকেলে রথে চেপে মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হলেও সন্ধ্যার পর নারায়ণ শীলাকে ফের দে পরিবারের কোনও প্রবীণ সদস্যের কোলে চাপিয়ে কাশীপুরের বাড়ির মন্দিরে ফিরে আনা হয়। শুধুমাত্র সাজানো রথটি মাসির বাড়িতে থেকে যায়।