বহিরাগতদের রাজ্যের ফুটপাত দখলের প্রতিবাদে মিছিল বাংলা জাতীয়তাবাদী সংগঠনের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বেআইনি দখল উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে উত্তাল বাংলার রাজনীতি। রবিবার বিকেলে হাজরা থেকে গড়িয়াহাট পর্যন্ত মিছিল করল জাতীয়তাবাদী বাংলা সংগঠন ‘বাংলা পক্ষ’। কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, নদীয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান থেকে সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন মিছিলে। সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়ও ছিলেন মিছিলে।
তাঁদের দাবি, বাইরের রাজ্য থেকে আসা লোকজন বা বহিরাগতদের বাংলার ফুটপাতে বসতে দেওয়া যাবে না। যাঁরা বর্তমানে বাইরের রাজ্য থেকে বাংলায় এসে হকারি করছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে উচ্ছেদ করতে হবে। যেসব ভূমিপুত্রকে ইতিমধ্যেই উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাঁদের পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছেন সংগঠনটি। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে সমর্থন জানান বলেও দাবি করেছেন। গর্গের কথায়, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলার উপরে অন্যান্য রাজ্যের বোঝা বাড়ছে। কাদের জন্য বাড়ছে? এই বহিরাগতদের জন্যই। তাই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বাস্তবায়ন চাইছেন তাঁরা।
কলকাতা শহরের ফুটপাত দখলমুক্ত করতে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ‘হকার জোন’ গড়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, ভিন রাজ্যের বাসিন্দারা এ রাজ্যের রাস্তায় হকারি করতে এসে রাস্তা এবং ফুটপাত দখল করে নিচ্ছেন।
কলকাতা পুরসভার সমীক্ষক দল এমন হকারদের সন্ধান পেয়েছে, যাঁরা মূলত বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর কলকাতা পুরসভা ১৫০ জন পুরকর্মীকে হকার সমীক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। সমীক্ষার কাজ করতে এক একটি হকার জোনে কমবেশি ১০টি করে দল নেমেছিল। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ৪০টি এমন টিম নামানো হয়েছিল। কোন রাস্তায় কত হকার বসছেন, তাঁদের নাম, ঠিকানা-সহ যাবতীয় তথ্য অ্যাপে নথিভুক্ত করতে বলা হয়। সমীক্ষকদের দেখা যাচ্ছে, কলকাতার রাস্তা ও ফুটপাতের অধিংকাশ এলাকাজুড়ে অন্য রাজ্যের বাসিন্দারাই দখল করে বসে আছেন।
সূত্রে খবর, চলতি মাসের শেষে বা আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে সমীক্ষার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি হবে। তারপর তা জমা পড়তে পারে নবান্নে। ২০১৫ সালের তালিকা অনুযায়ী শহরে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার হকার থাকার কথা। কিন্তু সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, গত ন’বছরে সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও শহরের অনেক জায়গায় কাগজকুড়ানি, গৃহহীন, ভবঘুরেরা রাতে ফুটপাথে থাকছেন। উড়ালপুলগুলির নিচে অংশ দখল করে নিচ্ছেন। তাঁদের সরাতে পুলিস কমিশনার বিনীত গোয়েলকে চিঠিও দিয়েছেন মেয়র। প্রসঙ্গত, গড়িয়াহাট, পার্ক সার্কাস, খিদিরপুর এলাকায় উড়ালপুলের নিচের অংশ দখল করে দোকান ও আশ্রয়স্থল বানানোর অভিযোগ জমা পড়েছে কলকাতা পুরসভা। তার ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করছে পুরসভা।