প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমায় ক্লেমের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র, ভুগতে হচ্ছে শ্রমিক-কর্মচারীদের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনার বিষয়ে একাধিকবার নিয়মে বদল এনেছে কেন্দ্র। কিন্তু ক্লেম মেটানোর নির্দেশনামায় যে স্বচ্ছতা রাখা হয়নি, তা বলছেন ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের কর্তারা। এই বিষয়ে একাধিকবার শ্রমমন্ত্রকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানান শ্রমিক সংগঠন টিইউসিসি’র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শিওপ্রসাদ তেওয়ারি।
তিনি বলেন, ‘শুধু আমাদের সংগঠনের কাছেই এই রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে শয়ে শয়ে অভিযোগ এসেছে, তা নয়। আমাদের সংগঠন অসমেও এমন ভূরি ভূরি অভিযোগ পেয়েছে। কোনও জেলায় অভিযোগের সংখ্যা চারশো, তো কোথাও ৬০০। অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের অভিজ্ঞতাও এক। সম্প্রতি প্রাক-বাজেট আলোচনায় আমাদের দিল্লিতে বৈঠকে ডাকেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিবের সঙ্গে কেন্দ্রীয় শ্রমসচিবও। বৈঠকে আমি বিষয়টি তুলি। নির্মলাদেবী দাবি করেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই কয়েক লক্ষ ক্লেম মিটিয়েছেন। কিন্তু আমরা তথ্য দিয়ে বিষয়টি চেপে ধরতে, তিনি বিষয়টি শ্রমসচিবের থেকে জানতে চান। শ্রমসচিব মেনে নেন, সমস্যা আছে। এরপরই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন নির্মলাদেবী।’ শিওপ্রসাদ তেওয়ারি বলেন, ‘আমরা আর্জি জানিয়েছি, জেলাভিত্তিক একজন করে নোডাল অফিসার রাখা হোক, যাঁরা সমস্যাগুলি খতিয়ে দেখবেন।’
প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর সাধারণ মানুষের মন রাখতে তিনটি জনমোহিনী প্রকল্প এনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী—প্রধানমন্ত্রী জনসুরক্ষা বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি বিমা এবং অটল পেনশন যোজনা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয় প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা। কারণ, প্রকল্প চালু হওয়ার সময় ২০১৫ সালে বিমার প্রিমিয়াম ছিল বছরে মাত্র ১২ টাকা। পরবর্তীকালে প্রিমিয়ামের অঙ্ক বেড়ে হয় ২০ টাকা। কিন্তু চাঞ্চল্যকর অভিযোগ হল, সরকারি বিমা হওয়া সত্ত্বেও বহু ক্ষেত্রে ক্লেমের টাকা মিলছে না।
এ বিষয়ে রাজ্যসভার সদস্য দোলা সেন বলেন, ‘জনসুরক্ষা বিমা যোজনার ক্লেমের টাকা না দেওয়া অভিযোগ যে আমার কাছে কত এসেছে ও আসছে, তা গুনে শেষ করা যাবে না। কিন্তু এর কোনও জুতসই জবাব আমি সরকারের থেকে পাইনি। আসলে সমস্যা অন্য জায়গায়। যে সরকার কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই হরেক প্রকল্প চালু করে, তার টাকা মেটানো তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এটাই বাস্তব। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। তার খেসারত দিচ্ছেন শ্রমিক-কর্মচারী তথা সাধারণ মানুষ।