নতুন পালক বিআইএন-র মুকুটে, বিরল রোগে সফল অস্ত্রোপচার, নবজীবন পেল আড়াই বছরের শিশু
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আড়াই বছরের শিশুকে নবজীবন দিয়ে নতুন কৃতিত্বের পালক বসল রাজ্যের অন্যইতম সরকারি হাসপাতাল বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজি (বিআইএন)-র মুকুটে।
বাচ্চার নাক দিয়ে অনবরত জল গড়াচ্ছে। খেতে, শুতে, হাঁটতে, খেলতে, ঘুমাতে, সব সময়। দেখে আড়াই বছরের অর্পণের মা ভেবেছিলেন, ছেলের সর্দি লেগেছে। মামুলি সর্দি, সব বাচ্চারই হয়। পাড়ার ডাক্তারও একই কথা বলে গিয়েছেন। কিন্তু হাজার ওষুধেও জল গড়ানো থামেনি। টানা ৮ মাস এই অবস্থা। কিছু একটা গন্ডগোল বুঝে মা-বাবা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে হাজির হন পিজি হাসপাতালে। সেখানকার নিউরো সার্জারির ডাক্তারবাবুরা প্রথম পরীক্ষাতেই বুঝে যান, এ মামুলি সর্দির জল নয়। এ হল মস্তিষ্ক গঠনকারী তরল (সেরিব্রোস্পাইনাউল ফ্লুইড)। শিশুটির নাক দিয়ে তা-ই বেরিয়ে আসছে, সঙ্গে বেরিয়ে এসেছে মস্তিষ্কেরও কিছুটা অংশ!
এটি একটি অতি বিরল অসুখ। তথ্যর বলছে, গত পঞ্চাশ বছরে দেশে এমন একশো রোগী পাওয়া গিয়েছে, যাদের কেউ বাঁচেনি। কিন্তু সঠিক সময়ে রোগ নির্ধারণ ও চিকিৎসার দৌলতে বেঁচে গিয়েছে হাওড়ার আমতার বাসিন্দা অর্পণ ঘোষ। প্রায় দিন পনেরো হাসপাতালে কাটিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাবা-মায়ের কোলে নিজের বাড়ি ফিরে গিয়েছে অর্পণ। অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল এই অস্ত্রোপচার করতে অর্পণের বাবা-মায়ের একটি পয়সাও খরচ হয়নি।
নিউরো সার্জারির বিভাগীয় প্রধান অধ্যাাপক ডা. শুভাশিস ঘোষের কথায়, ‘‘এমআরআই করতেই বোঝা গেল মস্তিষ্কের সামনের অংশ ক্রমশ বাঁ নাক দিয়ে বেরিয়ে আসছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আরেক চিকিৎসক ডা.কৌশিক শীল সিদ্ধান্ত নেন মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার না করলে অর্পণকে বাঁচানো সম্ভব নয়। কারণ এর পরেই ওর মেনিনজাইটিস হত। আর একবার মেনিনজাইটিস হলে বাঁচানো মুশকিল।” নিউরো সার্জেন ডা. কৌশিক শীলের কথায়, ‘‘প্রথমে খুলি খোলা হয়। দেখা যায় প্রায় ২ সেন্টিমিটার লম্বা ও গভীর একটি ছিদ্র। বিশেষ জাতীয় আঠা দিয়ে মুখ বন্ধ করা হয় সেই ছিদ্রের। পরে মস্তিষ্কের যে অংশ বেরিয়ে এসেছিল সেটি বাদ দেওয়া হয়।’’