দলে বিত্তবান চাই না, বিবেকবান চাই – আর কী নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ফি বছরের মতো এবারেও একুশের মঞ্চে সর্বশেষ তথা প্রধান বক্তা ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্যে একদিকে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন, অন্যদিকে বার্তা দিলেন দলের নেতা কর্মীদের জন্য।
বললেন, “সকলকে নিয়ে চলতে হবে। যেখানে জিতেছেন, সেখানে গিয়ে মানুষকে ধন্যবাদ জানাবেন। মানুষের জন্য কাজ করবেন। যেখানে জিতিনি, সেখানকার মানুষের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইবেন। মনে রাখবেন গাড়িতে ঘোরার চেয়ে পায়ে হেঁটে ঘোরা ভাল। তাতে শরীর, মন ভাল থাকে। বড় গাড়িতে ঘোরার থেকে স্কুটার, সাইকেলে ঘোরা ভাল।”
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, “অন্যায় করলে আমি দলের কাউকে ছাড়ি না। গ্রেপ্তার করি। অন্যায় করবেন না, অন্যায় সহ্য করবেন না। আমি পরিষ্কার বলছি, মা-বোনেদের সম্মান দেবেন। আমি দলে বিত্তবান লোক চাই না। বিবেকবান লোক চাই। কেন জানেন? পয়সা আসে, চলে যায়। কিন্তু সেবার কোনও বিকল্প নেই।”
তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যেন কারও বিরুদ্ধে দল কোনও অভিযোগ না পায়। অভিযোগ পেলে দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। আমি চাই আপনারা গরিব থাকুন। তার মানে ঘরে যা আছে, সেটা খেয়ে বেঁচে থাকুন। লোভ করার দরকার নেই।”
দুর্নীতি প্রশ্নে মমতার সাফ বার্তা, “দুর্নীতির কাছে মাথা নত করব না। এটা আজকে শপথ নিন। আমরা লড়াই করব। বৃষ্টি গায়ে লাগল তো? স্নান করলে ধুয়ে যাবে কিন্তু নোংরা গায়ে লাগলে সেটা ধোয়া যায় না। কেউ যেন আপনাকে লোভী বানাতে না পারে। আমাদের শপথ নিতে হবে, দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপোষ নয়। যাঁরা নির্বাচিত হয়ে মানুষের সেবা করবেন না, তাঁদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখব না।”
বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “বিজেপি আন্দোলনে পারে না। ১০ লক্ষ সরকারি চাকরি তৈরি আছে। কিন্তু কিছু করতে গেলে আদালতে ছোটে। কখনও বলছে ২৬ হাজারের চাকরি খাই, কখনও বলছে ৪২ হাজারের চাকরি খাই, কখনও বলছে ওবিসি উঠিয়ে দাও। উঠবে না। আমরা আইনি লড়াই করছি, করে যাব।”
বাংলা প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলার অস্তিত্ব রক্ষা করব। বাংলাই দেশের অস্তিত্ব রক্ষা করবে।”
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মমতা বলেন, “কিছু বলব না ওটা আলাদা দেশ। যা বলবে ভারত সরকার বলবে। আমি এটুকু বলতে পারি, যদি অসহায় মানুষ বাংলার দরজায় কড়া নাড়ে তবে আমরা আশ্রয় নিশ্চয়ই দেব। রাষ্ট্রপুঞ্জের একটা নির্দেশ আছে, কেউ যদি শরণার্থী হন, তবে তার পাশের এলাকা সম্মান জানাবে। বাংলাদেশ নিয়ে আমরা যেন কোনও উত্তেজনায় না জড়াই। সহমর্মিতা আছে।”