অর্থনীতির উন্নতির জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত বছরে ৮০ লক্ষ করে কর্মসংস্থানের প্রয়োজন, বলছে আর্থিক সমীক্ষা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরের বাজেটের প্রাকপর্বে নরেন্দ্র মোদীর অর্থমন্ত্রক জানাচ্ছে, বছরে ৮০ লক্ষ করে কর্মসংস্থান প্রয়োজন ২০৩০ সাল পর্যন্ত। তাহলেই সম্ভব অর্থনীতির উন্নতি। আর এই দাবির পর থেকেই জন্ম নিচ্ছে একের পর ধন্দ। কারণ, সরকারি তথ্যই যে পরস্পরবিরোধী।
কী সেই সব দাবি?
- ১) সোমবার প্রকাশিত অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, গত এক বছরেই ৪ কোটির বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে।
- ২) কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়ামমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী দাবি করেছিলেন, ‘গত ১০ বছরে সাড়ে ১২ কোটি কর্মসংস্থান হয়েছে।’
- ৩) নীতি আয়োগের রিপোর্ট ছিল, মোদি জমানায় বেকারত্বের হার ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ।
- ৪) আবার অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হল, ১৯৮১ সালের পর এই প্রথম কর্মসংস্থানে জোয়ার এসেছে। প্রশ্ন হল, কোনটা বিশ্বাসযোগ্য? মানুষ কি এর সুফল পাচ্ছে? উত্তর হল না। কারণ, কর্মসংস্থানের মাত্রাই যে স্থির করে উঠতে পারছে না এনডিএ সরকার।
রিপোর্ট বলছে, এই মুহূর্তে ভারতের মোট কর্মরত মানুষের সংখ্যা ৫৬ কোটি। কিন্তু তার মধ্যে ৪৫ শতাংশই কৃষিকাজে যুক্ত। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কর্মরত শ্রেণির মোট ৫৭ শতাংশ স্বনিযুক্ত কাজের মাধ্যমে আয় করছে। অস্থায়ী কাজ করছে ২১ শতাংশ। স্থায়ী আয় এবং নিয়মিত বেতন রয়েছে এরকম কর্মীর হার মাত্র ২০ শতাংশ। তাহলে ৪ কোটি কর্মসংস্থান কোথায় হল? আয়ের স্থিতিশীলতাই বা কোথায়? সমীক্ষা রিপোর্টই বলছে, সবচেয়ে কম কর্মসংস্থান উৎপাদন ক্ষেত্রে। এই সেক্টরে চাকরি না হওয়ার অর্থ, উৎপাদন কম। মানে, বাজারে চাহিদার অভাব। কারণ? মূল্যবৃদ্ধি।
সোজা কথায়, কাগজে-কলমে অর্থনৈতিক কোনও মাপকাঠিই ইতিবাচক নয়। অথচ সোমবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যে অর্থনৈতিক সমীক্ষা সংসদে পেশ করেছেন, সেখানে অর্থনীতির চিত্র নাকি ‘উজ্জ্বল’। গত কয়েক বছর ধরেই মূল্যবৃদ্ধি বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে আম জনতা প্রবল দুর্ভোগে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরকারের কোনও দায় অথবা দায়িত্ব স্বীকার করা হয়নি অর্থনৈতিক সমীক্ষায়। এতদিন সরকার অথবা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলে এসেছে, মূল্যবৃদ্ধির কারণ আন্তর্জাতিক টালমাটাল পরিস্থিতি। কিন্তু সোমবার অর্থনৈতিক সমীক্ষায় মাত্রাছাড়া খাদ্য মূল্যবৃদ্ধির জন্য অর্থমন্ত্রক দায়ী করল আবহাওয়াকে। বলা হল, চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার কারণে খাদ্যপণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই খাদ্যের দাম বাড়ছে। তারপরও অর্থনৈতিক সমীক্ষা মনে করছে, আগামী অর্থবর্ষে জিডিপি ৭ শতাংশ হবে!